মেশিনের দাপটে হেরে যাচ্ছে হাতে ভাজা মুড়ি
দিনের শুরুতে চায়ের কাপের সঙ্গে মুঠোমুঠো মুড়ি বাংলায় বেশ জনপ্রিয়। মুখরোচক এই খাবারটি শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ঋতুতেই প্রায় প্রতি বাড়িতেই থাকে কৌটা ভরে। আর রমজান এলে এর চাহিদা বেড়ে যায় সারা বছরের থেকে বেশ কয়েকগুণ। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নে বেশ বেকায়দায় পড়েছে মুড়ি তৈরির সনাতন পদ্ধতি। একই সঙ্গে বেকায়দায় আছেন এর কারিগরসহ সংশ্লিষ্টরা। আধুনিক প্রযুক্তিতে এর উৎপাদন তরতর করে বাড়লেও হারিয়ে যাচ্ছে সেই আদি স্বাদ।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পৌর শহরের আট নম্বর ওয়ার্ডের সাহা বাড়ির প্রবীণরা জানান, বহু বছর আগে এখনকার প্রায় সবাই হাতে মুড়ি ভাজতো। কিন্তু এখন মাত্র দুই থেকে চারটি পরিবার এ কাজে জড়িত। বাকি পরিবারগুলো মেশিনের মুড়ির দাপটে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে না পেরে পেশা বদলে নিয়েছেন। জীবিকার তাগিদে কেউ দিনমজুর, চটপটি, কেউ কৃষিকাজসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ছোটবেলা থেকেই তারা বাপ-দাদার সঙ্গে হাতে ভাজা মুড়ি তৈরি করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। সে সময় এ মুড়ির চাহিদা অনেক ছিল। রাত-দিন ভেজেও চাহিদা শেষ করতে পারত না। কিন্তু বাজারে মেশিনের মুড়ি আসার পর থেকে আস্তে আস্তে হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা কমতে শুরু করেছে। আর এখন নেই বললেই চলে। বাধ্য হয়ে তাদের গ্রামের প্রায় সবাই মুড়ি ভাজা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।
বকুলবাড়িয়া কলেজের প্রভাষক মু. জাহিদুল ইসলাম মিন্টু বলেন, মুড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগরদের দাবি সরকার যদি এ শিল্প বাঁচাতে এগিয়ে আসে তাহলে তাদের জীবিকা রক্ষা পাবে।