করোনা আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়ায় গত দুই মাসে ব্যপক হারে যে সব মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাদের ৬০ ভাগ রোগীই আগে থেকে ডায়াবেটিস, হার্ট, কিডনিসহ অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং হাসপাতালে আসার আগেই ৮০ ভাগ রোগীর অক্সিজেন সেচুরেশন ছিল ৫০ এর নিচে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব না মানা এবং উপসর্গ লুকিয়ে জনসমাগমস্থলে ঘোরাঘুরির কারণে কুষ্টিয়ায় করোনা সংক্রমণ বেড়েছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ২৫০ শয্যার কুষ্টিয়া করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল কতৃপক্ষ ১ থেকে ৭ আগষ্ট পর্যন্ত যৌথ সমীক্ষার পর গতকাল মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য প্রকাশ করেন।
কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. দেলদার হোসেনের সভাপতিত্বে নিজ কার্যালয়ে এই তথ্য প্রকাশ অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোমেন, মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সালেক মাসুদ, কার্ডিওলজির ডা. নাসিমুল বারী বাপ্পী, মেডিসিনের রেজাউল ইসলাম হিটু ও ডা. আক্রামুজ্জামান মিন্টু উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
হাসপাতালের ডেথ রিভিউ ও অডিট কমিটি এক সপ্তাহে মারা যাওয়া ৬৯ জন রোগীর চিকিতসার ব্যবস্থাপত্র পর্যালোচনা করে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করেন। সাংবাদিকদের সামনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়, করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসার পর যারা মারা গেছেন তাদের শতকরা ৫৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি এবং ৪১ জনের বয়স ছিল ৪০ বছরের বেশি। আর দুই ভাগ মারা গেছেন যাদের বয়স ছিল ৪০ বছরের নিচে।
এই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত মার্চ মাসে হাসপাতালে ৪৮ জন রোগী ভর্তি হলেও কোন মৃত্যু ছিল না। এপ্রিলে ১৩৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৮ জন মারা যান। মে মাসে ১২৮ জন আক্রান্ত হলেও মৃত্য ছিল ৬ জনের। জুন মাসে আক্রান্ত ৬৭৯ জন এবং মৃত্যু ৯৭ জন। এরপর জুলাই মাসে ১ হাজার ১০৮ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা যান ৩০৫ জন। আর অগস্টের ৭ দিনে মৃত্যু হয় ৬৯ জনের। এ পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় মোট মৃত্যু ৭ শতাধিক।