মুক্তিযোদ্ধার নাতি সেজে পুলিশে চাকরি, প্রতারণার মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধার নাতি বলে মিথ্যা পরিচয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে একজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
দীর্ঘ ১২ বছর পর তদন্তে তার প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়েছে। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে তিনি এখন পলাতক।
প্রতারণার অভিযোগ ওঠা ওই যুবকের নাম মো. সুমন (৩১)। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামে।
সর্বশেষ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানায় কর্মরত ছিলেন সুমন। গত বছরের ১ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। এরপর ২১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় প্রতারণার মামলা করা হয়।
সম্প্রতি আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে থানায় সমন জারির আদেশ এলে বিষয়টি জানা যায়।
মামলার এজাহার ও এর সঙ্গে সংযুক্ত নথিপত্র থেকে জানা যায়, আখাউড়ার মোগড়া গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে মো. সুমন ২০১২ সালে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পরীক্ষায় অংশ নেন এবং মুক্তিযোদ্ধার নাতি কোটায় চাকরির জন্য প্রতিবেশী মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন। প্রকৃতপক্ষে, হোসেন মিয়া তার দাদা নন।
তার এই প্রতারণার বিষয়ে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়েরের পর তৎকালীন কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেনকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই পুলিশ কর্মকর্তা স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত মো. সুমন ২০১২ সালের ৩ জুলাই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পান। তিনি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতিবেশী হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ থেকে কনস্টেবল পদে চাকরিতে ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে মো. সুমনের দাখিলকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হোসেন মিয়া (অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য), তার দাদা নন। সুমনের দাদার নাম আলতাফ আলী হোসেন।
মামলার বাদী উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনির আহম্মদ জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৬/৪১৯/৪২০ ধারায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে। সুমন তখন থেকেই পলাতক।