মহানবীর প্রিয় ৫ খাবার
মানুষের জীবনে স্বাস্থ্য অমূল্য সম্পদ। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ জরুরি। মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) হালাল ও পুষ্টিকর খাবার খেতেন। তার পছন্দের খাবার সম্পর্কে হাদিস থেকে জানা যায়। পাঠকদের জন্য মহানবীর প্রিয় পাঁচ খাবার তুলে ধরা হলো।
তামার (খেজুর) :আরব মরুভূমির দেশ। প্রধান খাদ্য খেজুর ও রুটি। নবীজি ফল পছন্দ করতেন। তার প্রিয় ফল খেজুর। খেজুর যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে অপরিসীম। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বার্লির এক টুকরো রুটির ওপর একটি খেজুর রাখতে দেখেছি। তারপর বলেছেন, ‘এটিই সালন-মসলা।’ (আবু দাউদ: ৩৮৩০)।
রাসুল কারিম (সা.) খেজুর নিজেও পছন্দ করতেন, সাহাবায়ে কেরামকেও খেজুর খেতে বলতেন। খেজুর খাওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে রাসুল (সা.) এটাও বলেছেন, যে ঘরে খেজুর নেই সে ঘরে খাবার নেই। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে বাড়িতে খেজুর নেই, সে বাড়ির অধিবাসীরা অভুক্ত।’ (আবু দাউদ: ৩৮৩১)। খেজুরে রয়েছে খনিজ লবণের উপাদান যা শরীর সতেজ রাখে।
যাবিব (কিশমিশ) : নবীজির আরেকটি খাবার খুব বেশি খেতে পছন্দ করতেন। নবীজি আঙ্গুর ও কিশমিশ খেতে ভালোবাসতেন। কিডনির জন্য খুবই উপকারী এ ফলে ভরপুর পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণ রয়েছে। আমরা কিশমিশ থেকে খুব দ্রুত শক্তি পেতে পারি। কিশমিশ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর জন্য কিশমিশ ভিজিয়ে রাখা হতো এবং তিনি সেগুলো পান করতেন।’ (মুসলিম: হাদিস ২০০৪)।
আসাল (মধু) : মধু আল্লাহর বিশেষ নিয়ামতগুলোর একটি। তাতে রয়েছে শেফা। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মিষ্টান্ন ও মধু পছন্দ করতেন।’ (বুখারি: ৫১১৫, মুসলিম: ২৬৯৫)।
মধুর নানা পুষ্টিগুণ ও ভেষজ গুণ রয়েছে। মধুকে বলা হয় খাবার পানীয় ও ওষুধের সেরা। ডায়রিয়া হলে হালকা গরম পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। বুখারি শরিফের আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মধু হলো উত্তম ওষুধ।’ (হাদিস: ৫৩৫৯)।
হালিব (দুধ) : স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী দুধ। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে দুধ অতুলনীয়। দুধে থাকে ভিটামিন বি-১২। রাসুল (সা.) নিয়মিত দুধ পান করতেন। দুধের উপকারিতা অনেক, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, ভালো ঘুম, হাড় মজবুত, ত্বক সুন্দর করাসহ উপকারিতার ফিরিস্তি অনেক বড়।
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, মেরাজের রাতে বায়তুল মাকদিসে আমি দুই রাকাত নামাজ পড়ে বের হলে জিবরাইল (আ.) আমার সম্মুখে শরাব ও দুধের আলাদা দুটি পাত্র রাখেন। আমি দুধের পাত্রটি নির্বাচন করি। জিবরাইল (আ.) বললেন, ‘আপনি প্রকৃত ও স্বভাবজাত জিনিস নির্বাচন করেছেন।’ (বুখারি: ৩১৬৪, তিরমিজি: ২১৩)।
সারিদ (গোশত, রুটিতে তৈরি খাবার): সারিদ হলো গোশতের ঝোলে ভেজানো টুকরো টুকরো রুটি দিয়ে তৈরি বিশেষ খাদ্য। আর হায়স হলো মাখন, ঘি ও খেজুর দিয়ে যৌথভাবে বানানো খাবার। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর কাছে রুটির সারিদ ও হায়সের সারিদ অত্যন্ত প্রিয় ছিল।’ (আবু দাউদ: ৩৭৮৩)।