সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে ইন্ডিয়ার সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড কে স্বীকৃতি দিচ্ছে না ইউরোপ। এই টিকা যারা নিয়েছে, তাদেরকে ইউরোপে ঢুকতে দেয়া হবে না।
অনেকে প্রশ্ন করছেন তাহলে এই টিকা নিয়ে লাভ কী? এই টিকা কি নিম্নমানের হওয়ায় ইউরোপ স্বীকৃতি দিচ্ছে না? দেশে (বাংলাদেশে) এ পর্যন্ত যারা টিকা পেয়েছেন তাদের প্রায় সবাই কোভিশিল্ড নিয়েছেন। এই সংবাদে তাই অনেকের দুশ্চিন্তা হচ্ছে। বিষয়টা পরিষ্কার করতে লিখছি।
প্রথমত, আস্ট্রাজেনেকার যে টিকা ইউরোপে তৈরি করা হয়েছে তার নাম ‘ভাক্সজেভ্রিয়া’। আর যেটা ইন্ডিয়াতে তৈরি হয়েছে তার নাম ‘কোভিশিল্ড’। নাম ভিন্ন হলেও দুইটি টিকা একদম একই। এদের মধ্যে গুনগত কোন পার্থক্য নেই।
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে ইউরোপে ‘ভাক্সজেভ্রিয়া’ অনুমোদন পেয়েছে, ‘কোভিশিল্ড’ কেন অনুমোদন পায় নি? কারণ ভাক্সজেভ্রিয়ার অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছিলো, কোভিশিল্ডের অনুমোদনের জন্য আগে আবেদন করা হয় নি। আবেদন না করার কারণ কোভিশিল্ড ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে রপ্তানি করা হয় নি।
সিরাম ইনস্টিটিউট এখন অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে। অনুমোদন পেয়ে যাওয়ার কথা।
কেন বলছি অনুমোদন পেয়ে যাবে? ‘কোভিশিল্ড’ ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেয়েছে। ইউরোপের অনুমোদনকারি সংস্থা EMA-র অনুমোদন না পাওয়া হবে খুব আশ্চর্যের বিষয়।
ইউরোপ কি এখনও শুধু কোভিশিল্ডেরই অনুমোদন দেয় নি? না। নোভাভ্যাক্স, স্পুটনিক ভি, চায়নার দুটি ভ্যাকসিন – এগুলোর কোনটাই তাদের অনুমোদন পায় নি।
এই সমস্যায় কি শুধু বাংলাদেশিরাই পড়ল? না। যুক্তরাজ্যেও প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ইন্ডিয়ার সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড নিয়েছে। এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ এই টিকা নিয়েছে।
এই সমস্যার কি সমাধান হবে না? কিছুদিনের মধ্যেই এই টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা। কিছু জায়গায় ভুল রিপোর্ট এসেছে যে ইউরোপ কোভিশিল্ড কে নাকচ করেছে। ইউরোপ এই টিকা সহ আরও কিছু টিকার অনুমোদনের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেয় নি। সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে নাকচ করে কীভাবে?
আশাকরি এই তথ্যগুলো দুশ্চিন্তা কমাবে।
লেখকঃ বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছেন।