ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ
ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আরিচা- কাজিরহাট নৌ-রুটে শতাধিক স্পিডবোট চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছে মালিক পক্ষ। ঈদের আগে স্পিডবোট বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দেশের পশ্চিম অঞ্চলের যাত্রীরা। মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল থেকে এ রুটে স্পিডবোট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এতে বাধ্য হয়ে বেশি সময় নিয়ে লঞ্চ ও ফেরিতে পারাপার হচ্ছে যাত্রীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালে আরিচা-কাজিরহাট রুটে দ্রুত পারাপারের জন্য স্পিডবোট সার্ভিস চালু হয়। যার নিয়ন্ত্রণ ছিল দু’পাড়ের তৎকালীন আওয়ামী লীগের এমপি ও নেতাকর্মীদের হাতে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় নির্ধারিত প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রুটে জনপ্রতি যাত্রী ভাড়া ছিল ২১০ টাকা। কিছুদিন পর জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি, চালকের বেতন ও অন্যান্য খরচ বিবেচনায় বোট মালিকরা যাত্রী ভাড়া ২৫০ টাকা হারে আদায় করতে শুরু করেন।
গণঅভুত্থানের পর থেকে প্রায় পাঁচ মাস এ রুটের স্পিডবোট সার্ভিস বন্ধ থাকে। গত কয়েক মাস আগে নতুন করে বোটের লাইন্সেস নিয়ে স্পিডবোট পুনরায় চালু করে সাধারণ ব্যবসায়ীরা। পূর্বের ন্যায় তারাও জন প্রতি ২৫০ টাকা করে ভাড়া আদায় করে।
স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি রহমত আলী লাভলু জানান, নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ গেজেটেড প্রকাশ করেন এ রুটে যাত্রী প্রতি ২১০ টাকা করে নির্ধারণ করে দেয়।
এতে স্পিডবোটের জ্বালানি ও ড্রাইভার খরচ মিলে লোকসানের মুখে পড়তে হয় প্রতি ট্রিপে। মালিক সমিতি যাত্রী ভাড়া ২৫০ টাকা করার দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরো বলেন, ঈদের সময় এক পাড়ে যাত্রী থাকে। বাধ্য হয়ে অপর পাড় থেকে যাত্রী ছাড়াই আসতে হয়। এতে বোট মালিকরা ব্যবসায়ে ক্ষতির কারণে বাধ্য হয়ে বন্ধ রেখেছে বোট।
কর্তৃপক্ষ আমাদের ন্যায় দাবি মেনে নিলেই আমরা পুনরায় বোট সার্ভিস চালু করব।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, আরিচা- কাজীরহাট নৌরুটে স্পিডবোটে ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে বোট বন্ধের বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। এখন ভাড়া বৃদ্ধি করার সুযোগ নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা নদী বন্দর উপ-পরিচালক মো. সেলিম শেখ জানান, স্পিডবোট মালিক সমিতির থেকে ভাড়া বৃদ্ধির জন্য একটি আবেদন পেয়েছি। কিন্তু, মন্ত্রণালয় প্রায় এক মাস আগে স্পিডবোট ভাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মালিকদের দাবি অনুয়ায়ী ভাড়া বৃদ্ধি না করায় এ রুটে স্পিডবোট সার্ভিস বন্ধ রেখেছে। তবে, লঞ্চ-ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

Comments are closed.