ভালো ফলন, লাভ বেশি, বাড়ছে সরিষা চাষ
লাভজনক হওয়ায় দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে সরিষার আবাদ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারো ভালো ফলনের আশা চাষিদের। এদিকে, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে সরিষা চাষে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কৃষি বিভাগের।
এখানকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ যেন হলুদ চাদরে মোড়ানো। হালকা বাতাসেই দোল খাচ্ছে সরিষা ফুল। লাভজনক হওয়ায় এলাকায় বাড়ছে সরিষা চাষ।
আমন ধানের পর ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস থাকে বিরতি। এরপর আবারও এ মাঠে শুরু হয় ইরি-বোরো চাষ। আর এ দুই-তিন মাস জমিতে সরিষা আবাদ করছেন কৃষক। কয়েক বছর ধরে চাহিদা অনুযায়ী মিলছে কাঙ্ক্ষিত ফল।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারও সরিষার বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের। তারা বলেন, আমন ধান কাটার পর নতুন ফসল চাষের আগে জমি খালি পড়ে থাকলেও এখন সরিষা চাষ করা হচ্ছে। বাজারে দাম ভালো হওয়ায় লাভও হচ্ছে। এতে দিন দিন সরিষা আবাদে চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে।
হাকিমপুর জেলার জালালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষ হওয়ার পরে ইরি-বোরো ধান লাগানোর জন্য অপেক্ষা করতে হয় দুই থেকে আড়াই মাস পর্যন্ত। এসময় জমিগুলো ফেলে না রেখে সরিষা আবাদ করেছি বাড়তি ফসল হিসেবে।
আরেক কৃষক আমেনা বেগম বলেন, ১০ কাঠা জমিতে সরিষা লাগিয়েছি। এই সরিষা থেকে উৎপাদিত তেল ঘরে ব্যবহার করব, বাড়তি সরিষা বিক্রি করব। সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হবে, তাছাড়া অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ইরি ধান রোপণ করব।
কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের এলাকার অধিকাংশ জমিতে দুই ফসল উৎপাদন হতো। বর্তমানে তিন ফসল হচ্ছে। যেই জমিতে সরিষা চাষ হয়, সে জমিতে পরবর্তীতে যে কোন ফসল ভালো হয়।
এদিকে, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে সরিষা আবাদ বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতার কথা জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ। দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাম্মদ আরজেনা বেগম বলেন, চলতি অর্থবছরে ২ হাজার জন কৃষকের মাঝে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া পরামর্শসহ যে কোনো সহযোগিতায় কৃষি বিভাগ কৃষকের পাশে আছে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি রবি মৌসুমে হাকিমপুর উপজেলায় ২ হাজার ৬২৬ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।