ভারতের সেনাবাহিনীকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া। তিনি বলেছেন, ‘ যেকোনো মিসএডভেঞ্চার বা ভারতীয় আগ্রাসনের উচিত জবাব দেয়া হবে সব সময়।’ তিনি আরো বলেছেন, ভারতীয়রা উস্কানি দিচ্ছে। সম্প্রতি তারা জাতিসংঘের যানবাহনকে টার্গেট করেছে। এর ফলে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা হুমকিতে পড়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। এতে বলা হয়, ভারতীয় সেনাবাহিনী বিনা উস্কানিতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আজাদ জম্মু-কাশ্মীরে হামলা করে একজন নারীকে হত্যা করেছে। একটি অল্প বয়স্ক বালক সহ দু’জন বেসামরিক ব্যক্তি এতে আহত হয়েছে। এরপর আজাদ জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বরফে আচ্ছাদিত এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থান পরিদর্শনে যান সেনাপ্রধান বাজওয়া।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস এক বিবৃতিতে বলেছে, এ সময় সেনাপ্রধানকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। বিশেষ করে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বেসামরিক মানুষজনকে টার্গেট করছে বলে অভিযোগ করা হয়। তাকে জানানো হয়, সম্প্রতি ভারতীয় সেনারা জাতিসংঘের একটি গাড়ি টার্গেট করেছিল আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন ও কনভেনশন লঙ্ঘন করে।
ডনের রিপোর্টে বলা হয়, শুক্রবার ভারতীয় সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে জাতিসংঘের একটি গাড়িতে গুলি করে। এ সময় ওই গাড়িতে আজাদ জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় নিয়মিত পর্যবেক্ষণ মিশনে ছিলেন সামরিক দু’জন পর্যবেক্ষক। কিন্তু এ সময় তাতে গুলি করাকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিন্দনীয় কর্মকান্ড বলে অভিহিত করেছেন। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী এই ইস্যুটি জাতিসংঘে তুলে ধরেছে পাকিস্তান। এ ঘটনার একটি স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে জাতিসংঘে।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, নিয়ন্ত্রণরেখায় নিরাপরাধ মানুষদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এর মাধ্যমে যেকোনো মূল্যে মাতৃভূমির সম্মান, মর্যাদা ও ভূখ-ের অখ-তা রক্ষা করবে সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধানের ওই সফরের যে ছবি ও ভিডিও ক্লিপ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা প্রকাশ করেছে, তাতে তাকে ও অন্য সিনিয়র সেনা কমান্ডারদের দেখা যায় বরফ আচ্ছাদিত পথ ধরে এগিয়ে যেতে। তাকে ব্রিফ করার পর জেনারেল বাজওয়া সেনাবাহিনীর উদ্দেশে মুক্ত বক্তব্য রাখেন। এ সময় সেখানে সমবেত সেনারা পাকিস্তানের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। একটি ছবিতে তাকে দেখা যায় একজন সেনা সদস্যের সঙ্গে কথা বলছেন। এর আগে তিনি নিয়ন্ত্রণ রেখায় পৌঁছলে সেখানে তাকে স্বাগত জানান রাওয়ালপিন্ডি কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজহার আব্বাস। এদিনের শুরুতে আজাদ জম্মু-কাশ্মীরের কর্মকর্তারা জানান ভারতীয় সেনারা কোটলি জেলার গোই সেক্টরে এবং পুঞ্চ জেলার আশপাশের অঞ্চলে ভারি গোলা নিক্ষেপ করেছে। এক্ষেত্রে তাদেরকে কোনো উস্কানি দেয়া হয়নি। তারা এসব হামলায় ব্যবহার করেছে ভারি মর্টার এবং অস্ত্রশস্ত্র। তারা টার্গেট করেছে বেসামরিক লোকজনকে।