ভর্তির আবেদন শুরু ঢাবিতে, বিস্তারিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সোমবার (৮ মার্চ) বিকাল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে উদ্বোধনের মাধ্যমে আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি আবেদন করা যাবে৷ তবে এবারের পরীক্ষায় বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, অন্যান্যবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হতো। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও ভোগান্তির কথা উঠে আসা। আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতিও এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এসব বিষয়কে বিবেচনায় রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল এবার বিভাগভিত্তিক পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
কেন্দ্র পছন্দের বিষয়ে তিনি বলেন, এবার শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রের স্থান বেঁচে নিতে পারবে। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, নিজেদের বিভাগীয় শহরকে যাতে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্র হিসেবে পছন্দ করে। ভৌগলিক কারণে কখনো নিজের বিভাগের চেয়ে অন্য জায়গা ভাল হয়। সেজন্য আমরা কেন্দ্র পছন্দের সুযোগ রাখছি।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্যবার শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সরকারি ব্যাংকে আবেদন করতে পারলেও এবার শিক্ষার্থীরা অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ফি জমা দিতে পারবে। কোম্পানিগুলোর সাথে আমাদের সমাঝোতা চুক্তি হয়েছে।
পরীক্ষার সময়ের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান জানান, বিভাগীয় শহরগুলোতে পরীক্ষা হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা অংশগ্রহণ করতে কেন্দ্রে আসতে কিছুটা সময়ক্ষেপন হতে পারে। সেজন্য আমরা ১০টার সময়টি ১১টায় নিয়ে এসেছি। এ ব্যবস্থা শিক্ষার্থীরা যাতে পরীক্ষায় সঠিক সময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
পরীক্ষার নিরাপত্তার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ডিনবৃন্দ ও বিভাগীয় শহরের উপাচার্যদের সাথে সভা হয়েছে। সেখানে তারা এসব বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তাদের সহযোগিতায় আমরা ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম পরিচালনা করবো। এটা প্রথমবার করছি, সামনে অনেকগুলো পথ উন্মোচিত হবে। বিভাগভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আসন বিন্যাসের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ইউনিটের অধীনে এবার মোট আসনসংখ্যা ৭ হাজার ১৩৩ টি৷ এবার বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটে ১ হাজার ৮১০ , কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটে ২ হাজার ৩৭৮ , ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটে ১ হাজার ২৫০, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটে ১ হাজার ৫৬০ এবং চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটে ১৩৫টি আসন রয়েছে৷
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, জনতা অথবা রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি জমা দিতে হবে। ১ এপ্রিল বিকেল চারটা পর্যন্ত টাকা জমা দেওয়া যাবে। এই বছরে শিক্ষার্থীরা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং অথবা ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে পারবে।
১ এপ্রিল থেকে বিকেল তিনটা থেকে সংশ্লিষ্ট ইউনিট এর পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে।
পরীক্ষার কেন্দ্র শিক্ষার্থীরা তাঁদের পছন্দমত ৮টি বিভাগীয় শহরের যে কোন একটি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করতে পারবে৷ এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী তার সুবিধামত কেন্দ্র পছন্দ করার সুযোগ আছে। তাদের সুবিধামত কেন্দ্র পছন্দ করতে পারবে। তবে আবেদনকারীকে নিজ বিভাগীয় শহরকে কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আবেদনের যোগ্যতা
ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীদের ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে ‘ক’ ইউনিটের জন্য মাধ্যমিক/সমমান এবং উচ্চ
মাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষায় (৪র্থ বিষয়সহ) প্রাপ্ত জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.৫ (আলাদাভাবে জিপিএ ৩.৫),‘খ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ (আলাদাভাবে ৩.০), ‘গ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ ( আলাদাভাবে ৩.৫), ‘ঘ’ ইউনিটের জন্য মানবিক শাখার ক্ষেত্রে জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ (আলাদাভাবে ৩.০) ও বিজ্ঞান শাখার ক্ষেত্রে জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.৫ (আলাদাভাবে ৩.৫) এবং ‘চ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৭.০ (আলাদাভাবে জিপিএ ৩.০) থাকতে হবে।
পরীক্ষার সময়সূচি এবারের ক-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২১ মে ২০২১ শুক্রবার, খ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২২ মে ২০২১ শনিবার, গ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ মে ২০২১ বৃহস্পতিবার, ঘ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৮ মে ২০২১ শুক্রবার এবং চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান) ৫ জুন ২০২১ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা সকাল ১১:০০টা থেকে দুপুর ১২:৩০ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
মানবণ্টন এবারের ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। শুধুমাত্র ‘চ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৬০ নম্বরের অঙ্কন পরীক্ষা হবে। ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় পাবে। ‘চ’ ইউনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট এবং অঙ্কন পরীক্ষার জন্য ৬০ মিনিট সময় পাবে। মাধ্যমিক জিপিএ-র উপর ১০ ও উচ্চমাধ্যমিক জিপিএ-র উপর ১০ করে মোট ২০ নাম্বার যোগ করে মেধা তালিকা তৈরি করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে প্রার্থীদের ভর্তির আবেদন