ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ ঠিক কতোটা অসুস্থ?
গতকাল দেশের প্রায় সবকয়টি গণমাধ্যম সংবাদ প্রচার করে যে, ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা এবং ইমেরিটাস চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ব্র্যাক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গত পরশু জানানো হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কিছুটা অসুস্থ বোধ করলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে তাঁর বর্তমান শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। স্যার আবেদের পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে আছেন। স্যার আবেদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের সংখ্যা সীমিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
বিষয়টিকে সংবেদনশীলভাবে দেখার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ করা হয়।
গতকাল ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মকর্তা মারফত জানা যায়, ফজলে হাসান আবেদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আগের দিনের চেয়ে তার শারীরিক অবস্থা ভালো। তিনি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন। তাকে যে কোনো সময় বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে।
১৯৭২ সালে ফজলে হাসান আবেদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা ব্র্যাক এখন বিশ্বের ‘সর্ববৃহৎ’ এনজিও হিসেবে স্বীকৃত। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি এর নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর নির্বাহী পরিচালকের পদ ছেড়ে চেয়ারপারসন হন তিনি। এ বছর আগস্ট মাসে সেই চেয়ারপারসনের পদ ছেড়েও অবসরে যান তিনি। দায়িত্ব নেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারে উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান। ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারপারসন হিসেবেও দায়িত্ব নেন জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আমিরা হক। তবে ‘অ্যামিরেটাস চেয়ারপারসন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে এখনও যুক্ত আছেন স্যার আবেদ।
অবসর প্রসঙ্গে ব্র্যাক থেকে বলা হয়েছিল, ৩৬ বছর বয়সে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন স্যার ফজলে হাসান। ৬৫ বছর বয়সে নির্বাহী পরিচালকের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর তাকে চেয়ারপারসন নির্বাচিত করে ব্র্যাকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ। পরবর্তীতে তিনি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের তত্ত্বাবধায়ক পর্ষদেরও চেয়ারপাসেন নির্বাচিত হন। এবার তিনি ব্র্যাক ও ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল দু’টোরই চেয়ারপাসেন পদ থেকে বিদায় নিলেন।
আর স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, “বিগত কয়েকবছর আমি ব্র্যাকে আমার পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে অনেক ভেবেছি এবং সেইমতো প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন আমার বয়স ৮৩ বছর। ব্র্যাককে সামনে এগিয়ে নেওয়ার কাজে যথাযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি ছিল আমার সিদ্ধান্তের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গর্ব ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, যাতে আমার অবর্তমানেও ব্র্যাক তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পারে।”
নিজ হাতে তিলে তিলে গড়ে তোলা ব্র্যাক থেকে হুট করে কেন অবসর নিলেন স্যার আবেদ? তিনি কি গুরুতর অসুস্থ? অসুস্থতাই কি তার এই কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে বড় কারণ? এমন সব প্রশ্ন এখন তাই উঁকি দিচ্ছে সচেতন মহলের মনে।