ব্রিটেন, ইতালি, জাপান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান বানাচ্ছে
জাপান, ব্রিটেন এবং ইতালি যৌথভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে পরিচালিত হতে পারে এমন এক অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরি করার চুক্তিতে সই করার কথা ঘোষণা করেছে। সমঝোতায় বলা হয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে এই ফাইটার জেট তৈরি করা হবে।
তিনটি দেশই বলছে, এর মধ্য দিয়ে তারা তাদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চায় কারণ সারা বিশ্বে আক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এই সমঝোতার ফলে ব্রিটেন ও জাপানের বর্তমান দুটো প্রকল্প – ব্রিটেনের টেম্পেস্ট এবং জাপানের এফএক্স- একীভূত হবে।
বলা হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য এমন একটি যুদ্ধবিমান তৈরি করা যা হবে অত্যন্ত দ্রুতগতির, শত্রু পক্ষের নজর এড়িয়ে চলতে সক্ষম, এমনকি কোনো চালক ছাড়াও এটি উড়তে পারবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে এতো বড় সামরিক চুক্তি করলো। ব্রিটেনের জন্য এই কর্মসূচি শুধুমাত্র সামরিক নয়, এর অর্থনৈতিক দিকও রয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলছেন, যৌথ এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য তার দেশে হাজার হাজার কর্মসংস্থান এবং একই সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্ককে আরো জোরদার করা।
ধারণা করা হচ্ছে, এর ফলে ব্রিটেনের অস্ত্র রপ্তানিও বৃদ্ধি পাবে। তিনটি দেশের মধ্যে হওয়া এই সমঝোতা অনুসারে নতুন প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমানটি তৈরি করা হবে ২০৩৫ সালের মধ্যে যা টাইফুন জেটকে প্রতিস্থাপন করবে।
তারা আশা করছে যে নতুন এই টেম্পেস্ট জেট সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র বহন করতে পারবে। এটি নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
বলা হচ্ছে, এই জঙ্গি বিমান একদিকে যেমন দ্রুত গতিতে উড়তে পারবে তেমনি এটি শত্রুপক্ষের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে আক্রমণ চালাতে সক্ষম হবে।
এতে থাকবে অত্যাধুনিক সেন্সর প্রযুক্তি। এছাড়াও থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যা চালককে বিপদের সময় সাহায্য করবে। এমনকি প্রয়োজন হলে এই যুদ্ধবিমান চালক ছাড়াও উড়তে পারবে। এখান থেকে হাইপারসনিক মিসাইল ছোঁড়াও সম্ভব হবে।
তবে এতো জটিল একটি বিমান তৈরি করা অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। এর আগে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান তৈরি করতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়েছে পেন্টাগনের।
আর একারণে ব্রিটেন অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমানটি তৈরি করার জন্য সহযোগী খুঁজছিল। এই প্রকল্পে ইতোমধ্যে যোগ দিয়েছে ইতালি। এখন জাপানের অংশগ্রহণের ঘোষণাও তাৎপর্যপূর্ণ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যখন উত্তেজনা বাড়ছে তখন মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে ব্রিটেনের এই সামরিক সমঝোতা উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
বলা হচ্ছে, আগামীতে আরো কয়েকটি দেশ এই প্রকল্পে যোগ দিতে পারে। ফ্রান্স, জার্মানি এবং স্পেন তাদের নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রও।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলছেন, নতুন প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমান আমাদের এবং সারা বিশ্বে আমাদের মিত্রদের রক্ষা করবে। কারণ এর ফলে আমাদের প্রতিরক্ষা-শিল্পের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। বিবিসি