বোল্যান্ডে ধরাশায়ী ভারত, সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া

জশ হ্যাজলউডের অনুপস্থিতিতে একাদশে ঢোকা স্কট বোল্যান্ডই হয়ে গেলেন ভারতের বিপক্ষে ১০ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজ জয়ের নায়ক। তার গতিতে দিশেহারা হয়ে সফরকারীরা সর্বসাকুল্যে ১৬১ রান সংগ্রহ করে। ৬ উইকেটের জয়ে ৩-১ ব্যবধানে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া।

সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রবিবার (৫ জানুয়ারি) মাত্র ১৬ রান যোগ করতেই শেষ ৪ উইকেট হারায় ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে বোল্যান্ডের ৬ এবং পুরো ম্যাচে ১০ উইকেট শিকারে সফরকারীরা ১৫৭ রানে গুটিয়ে যায়। প্রথম ইনিংসের ৪ রান লিড পাওয়ায় তাদের পুঁজি দাঁড়ায় ১৬১–তে। তবে বুমরাহহীন দলের জন্য সেটি যে মামুলী সংগ্রহ তারই প্রমাণ মিলল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ে। ৬ রানের বেশি গড়ে ব্যাট করে তারা গন্তব্যে পৌঁছেছে মাত্র ২৭ ওভারে।

দারুণ জয়ের দিনে অধিনায়ক কামিন্স নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘অকল্পনীয় (অনুভূতি)। আমাদের মধ্যে কয়েকজনের এমন (বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি জেতা) অনুভূতি ছিল না। ছেলেরা এটার উপর নজর রেখেছিল এবং প্রত্যাশা পূরণ করেছে।’

দুই দলের মুখোমুখি দেখায় সর্বশেষ ২০১৪–১৫ মৌসুমে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর ২০১৬–১৭ মৌসুম থেকে শুরু করে ভারতই বিশেষ এই ট্রফির প্রতিটি সিরিজ জিতে আসছে। আজকের জয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে প্যাট কামিন্সের দল। এই সিরিজের চতুর্থ টেস্টে হেরে লড়াইয়ে আগেই পিছিয়ে পড়েছিল ভারত, আজ তারা পুরোপুরি ছিটকে গেল। অন্যদিকে, আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা দক্ষিণ আফ্রিকাও পেয়ে গেল শিরোপানির্ধারণী ম্যাচের প্রতিপক্ষ।

লক্ষ্য তাড়ায় এদিন স্বাগতিক অজিদের ঝোড়ো শুরু এনে দেন তরুণ ওপেনার স্যাম কনস্টাস। ৩.৫ ওভারে ৩৯ রান উঠতেই বিদায় নেন তিনি। প্রসিধ কৃষ্ণার বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে কনস্টাস ১৭ বলে ২৩ রান করেন। মাঝে অবশ্য কিছুটা বিপদেই পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। অল্প সময়ের ব্যবধানে আউট হয়ে যান মার্নাস লাবুশেন (৬) ও স্টিভেন স্মিথ (৪)। এরপর উসমান খাজা ও ট্রাভিস হেড মিলে ৪৬ রানের জুটি গড়ে হারের শঙ্কা উড়িয়ে দেন।

খাজা ৪১ রানে ফিরলেও, আরেকপ্রান্ত আগলে রাখেন হেড। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তিনি অভিষিক্ত ব্যু ওয়েবস্টারের সঙ্গে ৫৮ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন। হেড ৩৪ এবং ওয়েবস্টার ৩৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত। ভারতীয় অধিনায়ক বুমরাহ থাকলে হয়তো আরও রোমাঞ্চ বাড়ত সিডনি টেস্টে। তবে তার অনুপস্থিতিতে প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসও ভালোই সামলেছেন প্রসিধ কৃষ্ণা। দুই ইনিংসেই তিনি ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন।

এর আগে সিডনি টেস্টের শুরু থেকেই দাপট ছিল দুই দলের পেসারদের। প্রথমদিন ১১ উইকেট এবং দ্বিতীয় দিন ১৫ উইকেট পড়তেই ম্যাচের জল যে বেশিদূর গড়াবে সেই ইঙ্গিত মিলছিল। বিপরীতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দুই দলই। ভারত ১৮৫ রানে অলআউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ারও ইনিংস থামে ৪ রান পিছিয়ে ১৮১ রানে।

সিরিজ ড্র করতে হলে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটারদেরই দায়িত্ব নিতে হতো, কিন্তু এক রিষাভ পান্ত ছাড়া বলার মতো রান পাননি কেউই। ৩৩ বলে তার ৬১ রানের ঝোড়ো ইনিংস ছাড়া ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে যশস্বী জয়সওয়াল ২২ রান করেন। ৬ উইকেটে ১৪১ রান তুলে ভারত দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল। ক্রিজে রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর থাকায় পুঁজি আরও বড় করার স্বপ্ন ছিল সফরকারীদের। কিন্তু সেটি ধূলিস্যাৎ হয়েছে বোল্যান্ডের তোপে। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি সর্বোচ্চ ৬ এবং অজি অধিনায়ক কামিন্স ৩টি উইকেট শিকার করেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.