বেড়েছে ছিনতাই, ডাকাতি: অভিযানে নামছে পুলিশের তিন বিশেষায়িত ইউনিট

চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ পরিস্থিতি ক্রমেই চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বিগত সময়ের তুলনায় বেড়েছে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই। সবশেষ রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকায় আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক স্বর্ণ-ব্যবসায়ীকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার কাছে থাকা প্রায় ২০০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনেই। আনোয়ার পুলিশকে জানিয়েছেন, তার কাছ থেকে প্রায় ২০০ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে ছিনতাইকারীরা। তার পায়ে গুলি লেগেছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বনশ্রীতে ছিনতাইকারীর গুলিতে আহত অনোয়ার হোসেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় চলন্ত বাসে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। দুদিন আগে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি হয়েছে। গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকার মধ্যে এই এই ডাকাতি হয়েছে। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা অভিযোগ স্বীকার করেছে বলেও পুলিশ দাবি করেছে।

রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম, সবুজ ও শরীফুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

এই অবস্থায় পুলিশের তিনটি বিশেষায়িত ইউনিট শিগগিরই মাঠে নামবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

আইজিপি বলেছেন, রাতে ছিনতাই বেড়েছে। দিনেও ছিনতাই বেড়েছে। ছিনতাই প্রতিরোধে বিশেষ একটি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশ, র‍্যাব ও এন্টি টেরোরিজম ইউনিট যৌথ অভিযান পরিচালনা করবে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে এটি বাস্তবায়িত হবে আশা করি। আমরা দেখি এভাবে উন্নতি হয় কিনা। না হলে আমাদের অন্য পরিকল্পনায় যেতে হবে।

রাজশাহীর প্রাইমারি ট্রেনিং সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইজিপি বাহারুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

সোমবার সকালে রাজশাহীর প্রাইমারি ট্রেনিং সেন্টারে দেশের পরিবর্তন পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ে কর্মশালায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।

আইজিপি বলেন, যৌথ বাহিনীতে একটা সাইজেবল কম্পোনেন্ট থাকে। আসলে পুলিশে এত বড় কম্পোনেন্ট নেই। কিন্তু যৌথ বাহিনী একটি জয়েন্ট পার্টি। অপারেশন ডেভিল হান্ট মূলত যারা সন্ত্রাস করে সমাজবিরোধী কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে। এটি আমরা শুরু করেছিলাম বেশ কয়েকদিন আগেই। ডেভিল হান্টে কারা ধরা পড়ছে আপনারা একটু দেখেন। বড় সন্ত্রাস, বড় চোরাকারবারি সবাই ধরা পড়ছে।

আইজিপি বলেন, একটি গোষ্ঠী চায় না বাংলাদেশে স্মৃতিশীল পরিবেশ বজায় থাক। সেটার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতির ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন ওই বাসের যাত্রী মোহাম্মদ ওমর আলী। ওই ঘটনায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় শুক্রবার যে মামলাটি দায়ের হয়েছে তার বাদী তিনি। তিনি ঢাকার গাবতলী থেকে নাটোরের বড়াইগ্রাম যাওয়ার জন্য রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহণের বাসে উঠেছিলেন।

এজাহারে ওমর আলী লিখেছেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে চা পানের বিরতির জন্য বাস থামলে ডাকাতরা বাসে ওঠে। এরপর বাস গন্তব্যে রওয়ানা দিলে ৮-৯ জন যাত্রীবেশী ডাকাত চালকের গলায় চাকু ধরে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর ডাকাতরা পুরো বাসে ভোর রাত চারটা পর্যন্ত ডাকাতি করে। তারা তাদের ইচ্ছে মতো বাসটির গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করে। বাসের প্রত্যেক যাত্রীর টাকা, স্বর্ণালংকার সব কিছুই তারা নিয়ে নেয়। ডাকাত দল ডাকাতি করা ছাড়াও দুই নারীর শ্লীলতাহানি করে বাসের পিছন দিকে নিয়ে।

৯৯৯-এ ফোন করলে ভোর রাতের দিকে পুলিশ আসে৷ ডাকাতরা তার আগেই বাস থামিয়ে নেমে যায়। এরপর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় যাওয়া জন্য পুলিশ পরামর্শ দিলে বাসটি সেখানে নিয়ে যায় চালক। কিন্তু থানা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বাসটিকে যাত্রীসহ রাজশাহী পাঠিয়ে দেয়। বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রামে গেলে পুলিশ ড্রাইভার ও হেলপারদের আটক করে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠায়।ঘটনার তিনদিন পর শুক্রবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় মামলা হয়।

খোদ রাজধানীতে বাসে দুর্বৃত্তদের হানার ঘটনা ঘটছে। উত্তরা এলাকায় চলন্ত বাসে অস্ত্র ঠেকিয়ে ‘ছিনতাইয়ের’ ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় একটি বাসে এ ঘটনা ঘটে। এক ভুক্তভোগী তার ফেসবুক পোস্টে জানান, সকাল ৮টার দিকে তিনি উত্তরা থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রথমে রিকশায় যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পাবলিক বাসে ওঠেন। কিন্তু বাসে ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি পালটে যায়। বাসটি যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর আরো পাঁচ-ছয় জন যুবক সাধারণ যাত্রীর মতো বাসে ওঠেন।এরপর হঠাৎ তারা ছুরি বের করে চিৎকার করে বলে, ‘সবাই চুপ, যা আছে বের করে দে।’ মুহূর্তের মধ্যেই তারা বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, ওয়ালেটসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এ সময় এক যাত্রীকে ছুরিকাঘাতও করে তারা। মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই কাজ সেরে বাস থেকে নেমেও যায় তারা।

রাজধানীর উত্তরায় প্রকাশ্যে এক দম্পতিকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দুজন। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে উত্তরায় সোমবার রাতে এক দম্পতিকে দুর্বৃত্তরা কোপায়। কোপানোর দৃশ্যের ভিডিও ভাইরাল হলে পুলিশ প্রথমে দুইজনকে এবং পরে কিশোর গ্যাংয়ের আরো কয়েকজনকে আটক করে।

একইভাবে মালিবাগে দিনের বেলায় আবু রায়হান নামে এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে ৪৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি সাভারে যাত্রীবাহী বাসে ছিনতাই হয়। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে তিনজন আহত হন।

৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেই শতাধিক বাস ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইও বেড়েছে ব্যাপক হারে৷

জানুয়ারিতে ঢাকার মগবাজার এলাকায় রাতে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবলু হক শোভন। তার টাকা ও ল্যাপটপ কেড়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। তিনি বলেন, আমি মামলা করলেও পুলিশ এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি রাতে তো দূরের কথা দিনেও রাস্তায় চলাচল করতে ভয় পাই। পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। রাজশাহীতে বাসের ভিতর ডাকাতি ও দুই নারীর শ্লীলতাহানির যে ঘটনা শুনেছি, তাতে আমার মনে হচ্ছে পরিস্থিতি খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে।

শ্যামলী হাউজিং এলাকায় ৪ জানুয়ারি রাতে মামুন হোসেনেকে কুপিয়ে ডান হাতের কব্জি কেটে নেয় ছিতাইকারীরা। মামুনের কাছ থেকে বেতনের ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। তার স্ত্রী লাইজু বলেন, আমার স্বামী এখনো হাসপাতালে। আমার পরিবারের আর কোনো আয়ের উৎস নাই। এখন আমরা পথে বসতে যাচ্ছি। পরিস্থিতি যা, তাতে রাস্তা-ঘাটে, বাসে, গাড়িতে কোথাও নিরাপদ নয়। আমি রাস্তায় বের হতে ভয় পাই।

আদাবরে সুমন শেখ ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন ডিসেম্বরের ২৯ তারিখ। তিনি এখানো হাসপাতালে। ছিনতাইকারীরা কুপিয়ে তার টাকা নিয়ে যায়। তিনি বলেন, আমার মাথা, হাত, পিঠ সবখানেই কুপিয়েছে। আমি কবে সুস্থ হতে পারবো জানি না। আমি ঘুমের মধ্যেই ছিনতাইকারী দেখি।

গত বছরের শেষ চার মাসে রাজধানীতে ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ১২৫টি আর ডাকাতির ঘটনায় মামলা ২২টি। গত সেপ্টেম্বরে ছিনতাই মামলা হয়েছে ১৭টি, ডাকাতির ৫টি ; অক্টোবরে ছিনতাই মামলা ৩৩টি, ডাকাতির মামলা ৬টি ; নভেম্বরে ছিনতাই মামলা ৩৮টি, ডাকাতির ২টি এবং ডিসেম্বরে ছিনতাই মামলা ৩৭টি, ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে ৯টি। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী, হাতিরঝিল ও শাহজাহানপুর থানায়।

পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অপরাধচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ডাকাতি ছিল ১৩৫টি, চুরি ৯০৪টি ও খুন হয়েছিল ২৩৩ জন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দেখা গেল ডাকাতি ২৩০টি, চুরি ৯৬৬টি ও খুন ২০৪টি। পাশাপাশি বার্ষিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে ডাকাতির ঘটনা ছিল এক হাজার ৫৪৬টি, চুরি তিন হাজার ৯০টি ও খুন তিন হাজার ২৩ জন। সেখানে ২০২৪ সালে এসে ডাকাতি হয়েছে ১ হাজার ৯০২টি, চুরি ১১ হাজার ৩১০টি এবং খুন ৩ হাজার ৪৩২ জন। অর্থাৎ, ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় চুরি বেড়েছে ৮ হাজারেও বেশি। খুনও বেড়েছে চার শতাধিকের মতো।

মোহাম্মদপুরে বেপরোয়া ছিনতাইকারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও অপরাধ বিশ্লেষক মোহাম্মদ তৌহিদুল হক বলেন, আগে সড়কে ও রিকশায় ছিনতাই হতো বলে মানুষ গণপরিবহণ নিরাপদ মনে করে তাতে যাতায়াত বেশি শুরু করে। কিন্তু এখন বাস বা গণপরিবহনও নিরপাদ নয়। কারণ, অপরাধীদের টার্গেটে এখন গণপরিবহণ। এটার কারণ হলো, অপরাধীরা আইনের আওতায় আসছে না। তাই তারা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। মানুষ ঘরে বাইরে কোথাও এখন আর নিরাপদ নয়।

তার কথা, ৫ আগস্টের পর যে তথাকথিত মবজাস্টিস শুরু হয়েছে, এতে তার একটা প্রভাব আছে। বিশেষ করে কিশোর গ্যাং এতে উৎসাহিত হচ্ছে। তারা দলবেঁধে অপরাধ করছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট বলেন আর যৌথ বাহিনী বলেন, কেউই কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। অপরাধ বিস্তৃত হচ্ছে, ধরনও পাল্টাচ্ছে। আর পুলিশ এখনো তার অবস্থানে যেতে পারেনি। তারা দায়িত্ব এড়িয়ে চলছে। মনে হচ্ছে, তারা এখনো কী হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছে।

অপরাধ বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে পুলিশের সাবেক আইজি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, আসলে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। এটা ঠিক যে, যানবাহনে ছিনতাই বেড়েছে। অন্য অপরাধও বেড়েছে। এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা… নানা বিষয় এখানে সক্রিয় থাকতে পারে। তবে নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা সরকারের দায়িত্ব।

আরেক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, পুলিশের মধ্যে তো সমস্যা আছে। তারা তো এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় আসেনি। এখন এই বাসে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলো ঠিকমতো তদন্ত করলে আমার ধারণা অপরাধের নতুন ধারা বোঝা যাবে।

ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সক্রিয় আছে জানিয়ে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, মোহাম্মদপুর থেকে একটি গ্যাংয়ের ২২ জনকে আটক করা হয়েছে। প্রতিদিনই অভিযান চলছে। তার কথা, “অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোতে টহল বাড়ানো হয়েছে। যারা চিহ্নিত ও লিস্টেড অপরাধী, তাদের বাইরে আরো যে গ্রুপগুলো সক্রিয় হয়েছে, তাদেরও ধরা হচ্ছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.