বৃক্ষ রোপণের ফলে গভীর বনে রূপ নিচ্ছে রঘুনন্দন
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় রঘুনন্দন রেঞ্জের অবস্থান। প্রায় ১০ হাজার ৬৫০ একর জমির এ রেঞ্জের অধীনে শালটিলা, শাহজিবাজার, শাহপুর ও জগদীশপুর বিট রয়েছে। টিলার পর টিলায় রয়েছে নানা প্রজাতির গাছ। প্রতি বছর নতুন করে নানা প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে। এতে ধীরে ধীরে গভীর বনে রূপ নিয়েছে এ রেঞ্জটি।
সর্বশেষ উপকারভোগীদের মাধ্যমে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে প্রায় ১৮০ হেক্টর জমিতে নতুন করে বনায়ন করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব নিরসনে সিলেট বন বিভাগের পুর্নবনায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২০ প্রজাতির ২ লাখ ৭৫ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, এ বনে শাল, সেগুন, আগর, গর্জন, চাপালিশ, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, জাম, জামরুল, সিধা জারুল, আওয়াল, মালেকাস, আকাশমনি, বাঁশ, বেত, জলপাই, তেঁতুল, বহেরা, আমলকী, হরীতকীসহ ঔষধি ও ফলের নানা প্রকার গাছ রয়েছে। ফল খেয়ে বন্যপ্রাণির জীবন রক্ষা পাচ্ছে। সেই সঙ্গে অক্সিজেনও মিলছে।
তিনি বলেন, এ বনে রয়েছে বানর, উল্লুক, চশমা পরা হনুমান, শিয়াল, মেছো বিড়াল, মায়া হরিণের বিচরণ। আছে নানা প্রজাতির সাপ। কাও ধনেশ, বন মোরগ, লাল মাথা ট্রগন, কাঠ ঠোকরা, ময়না, ভিমরাজ, শ্যামা, ঝুটিপাঙ্গা, শালিক, হলদে পাখি, টিয়া প্রভৃতি পাখির নির্ভয় বিচরণ
মাসুদুর রহমান জানান, কম সংখ্যক জনবলে এ বিশাল বন দেখভাল করা হয়। বনের পাশে কোনো প্রাচীরও নেই। তবে স্থানীয়রা বনরক্ষীদের সঙ্গে বনরক্ষায় কাজ করে চলেছেন। উপকারভোগীরা বন রক্ষায় সহায়তা করছে।
পরিদর্শনকালে জানা গেছে, রেঞ্জ অফিসের এরিয়ায় নার্সারিতে নানা প্রজাতির চারা প্রস্তুত করা হচ্ছে। নিয়ম মেনে চারাগুলো বনে রোপণ করা হয়। বিশেষ করে ঔষধি ও ফলের নানা প্রকার গাছ রয়েছে। এ সব গাছ থাকায় বন্যপ্রাণির উপকার হচ্ছে। প্রাণির বিচরণ বাড়ছে। বনের মধ্যে অবস্থান করলে মনে প্রশান্তি আসে।
পরিবেশ প্রেমিক তারেক তালুকদার বলেন, রঘুনন্দন রেঞ্জে নানা প্রজাতির গাছ ও বন্যপ্রাণি রয়েছে। এখানে জনবল কম থাকার পরও স্থানীয়দের সহায়তায় বনটি নতুন রূপে সেজে উঠছে।