‘বিলিয়ন ফর বাংলাদেশ’: উন্নয়নে গতি আনাই লক্ষ্য

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পর্যটন ও আবাসন খাতে ১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল সংগ্রহ প্রবাসীদের

নিজ দেশ ছেড়ে অন্যদেশে পাড়ি জমিয়েছেন এমন বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। যাদের পাঠানো রেমিট্যান্সে সচল থাকে দেশের অর্থনীতি। জুলাই অভ্যুত্থানে রেমিট্যান্স শাটডাউনের মাধ্যমে আন্দোলনে প্রবাসীদের ছিল সক্রিয় ভূমিকা। এবার আরো ভিন্নভাবে দেশের জন্য বড় কিছুর সম্ভাবনা নিয়ে আসছেন এই প্রবাসীরাই।

দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পর্যটন ও আবাসন খাতের জন্য ১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল সংগ্রহ করছেন তারা। এই উদ্যোগকে নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিলিয়ন ফর বাংলাদেশ’। দেশের বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে এই অর্থ। প্রবাসীরা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানকে প্রেরণা হিসেবে নিয়েই এমন উদ্যোগ।

একদিকে ডলার সংকট আর অন্যদিকে দেশের টালমাটাল অর্থনীতি। অভ্যুত্থানের পর বিদেশি বিনিয়োগে এসেছে স্থবিরতা। এমন সময়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে বাংলাদেশের জন্য এক বিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছে বিলিয়ন ফর বাংলাদেশ।

বিলিয়ন ফর বাংলাদেশের কো-ফাউন্ডার ও সিএমও আনিসুল কবির জেসির বলেন, ‘বিলিয়ন ফর বাংলাদেশ কনসেপ্টটা হচ্ছে প্রবাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দুই কোটি প্রবাসীদের থেকে সিলেক্টেড ওয়ান মিলিয়ন প্রবাসী যারা আমাদের ফিলোসফির সাথে অ্যালাইনড হয় যে আমরা দেশের জন্য কিছু দিতে আসবো কিছু নিব না। দ্য ফাস্ট টাইম এভার আসছে, যেখানে আমরা কন্ট্রিবিউশনটা দিচ্ছি দেশে ইমপ্যাক্টফুল সার্ভিসের জন্য। আমি যে ডিভিডেন্টটা পাব সেটা হচ্ছে ইমপ্যাক্ট।’

আনিসুল কবির জেসি।ফাইল ছবি

নিতে নয়; দিতে এসেছি। এমন ভাবনায়, আগামী একবছর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ডলার করে, আমেরিকায় নিবন্ধিত কোম্পানিটির মালিকানা নেয়া যাবে। এরপর বিডা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে এই অর্থ দেশে আসবে।

বিলিয়ন ফর বাংলাদেশের কো-ফাউন্ডার ও সিইও আনিস এম রহমান বলেন, ‘এটা একটা বড় অ্যামাউন্ট। আর আমরা জিনিসটা করছি ফুল কমপ্লায়েন্স উইথ বিডা ও বাংলাদেশ ব্যাংক। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা যেভাবে জিনিসটা করছি শুধু ফান্ড না, ফান্ড প্লাস ট্যালেন্ট নলেজ ট্রান্সফার প্লাস রিসার্চ।’

বড় অঙ্কের এই টাকা বিনিয়োগ হবে আপাতত ১০টি উন্নয়ন খাতে। যেখানে গুরুত্ব পাবে, প্রযুক্তি, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, পর্যটন থেকে শুরু করে সম্ভাবনাময় কয়েকটি খাত।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ জান রুমি বলেন, বিলিয়ন ফর বাংলাদেশ প্রজেক্টকে ক্রিটিক্যালি ইমপরট্যান্ট বলে মনে করি। কারণ ফান্ড দিয়ে দেশের ম্যাস এমপ্লয়মেন্ট, এডুকেশন ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

প্রধান উপদ্ষ্টো ড. ইউনূসের থ্রি-জিরোকে সামনে রেখে সফলতা ছুঁতে চান প্রবাসীরা।

বিলিয়ন ফর বাংলাদেশের কো-ফাউন্ডার ও সিটিও মাহদীউজ্জামান অপু বলেন, ‘যে সেক্টরেই যাই না কেন স্কিল রিসোর্স দরকার। তার মানে আমাকে কিছু স্কিল রিসোর্স বানাতেই হবে। এখন আমি এগ্রিকালচার, ম্যানুফ্যাকচার থেকে শুরু করে যেকোনো সেক্টরেই যাই না কেনো আমরা খুঁজে বের করবো এ মুহূর্তে কাজটা কোথায় দরকার।’

বিলিয়ন ফর বাংলাদেশের লক্ষ্য এখানেই থেমে থাকা নয়। নিজ দেশের জন্য লাখো বাংলাদেশির এমন উদ্যোগ সফলতার আলো দেখলে ভবিষ্যতে আরো বড় পদক্ষেপ নিবে বিলিয়ন ফর বাংলাদেশ।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.