বিখ্যাত ও ধনী যেসব ব্যক্তিরা একসময় চরম দরিদ্র ছিলেন
জে.কে.রাউলিং জনপ্রিয় কল্পকাহিনী হ্যারি পটার সিরিজের রচয়িতা, যা তাকে বিশ্বজুড়ে সম্মান ও জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। সারা বিশ্বে হ্যারি পটার সিরিজের ৪০০ মিলিয়নেরও অধিক কপি বিক্রি হয়েছে যা তাকে বই লিখে বড়লোক হওয়া প্রথম বিলিয়নিয়ার (আমেরিকান ডলারে) হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
বইয়ের বাইরে হ্যারি পটার সিরিজের প্রতিটি সিনেমাই ব্লকবাস্টার হিট।
২০০৬ সালে বিখ্যাত ফোর্বস পত্রিকা তাকে অপরাহ উইনফ্রের পর পৃথিবীর দ্বিতীয় সেরা মহিলা ধনী হিসেবে তথ্য প্রকাশ করেছে।
কিন্তু এই লেখক ছোটকালে দরিদ্র অবস্থায় জীবন অতিবাহিত করেন। তার মা ছিলেন সিঙ্গেল মাদার এবং তিনি রাউলিংকে নিয়ে এডিনবার্গের জনকল্যাণ মূলক একটি আশ্রমে বাস করতেন। রাউলিং নিজে এতোটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন।
স্টিভ জবস যুক্তরাষ্ট্রের একজন উদ্যোক্তা এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবক। তাকে পার্সোনাল কম্পিউটার বিপ্লবের পথিকৃৎ বলা হয়। “অ্যাপল কম্পিউটার” এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাকে সবাই চেনে। তিনিই প্রথম পৃথিবী জুড়ে জনপ্রিয় ‘আইফোন’ অবমুক্ত করেন। তিনি এক শ্রমিক দম্পতির দত্তক নেয়া সন্তান ছিলেন। খুব কষ্ট করে তিনি তার কলেজের ব্যয় বহন করতেন। এই মানুষটিই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন।
অপরাহ উইনফ্রে জনপ্রিয় মার্কিন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। টক শো-এর উপস্থাপিকা হিসাবে তিনি বিপুল জনপ্রিয়। একই সাথে তিনি একজন মানবহিতৈষী ও গণমাধ্যম ধনকুবের। তিনি বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ধনী আফ্রিকান মার্কিন, উত্তর আমেরিকার প্রথম কোটিপতি এবং সর্বকালের সেরা আফ্রিকান মার্কিন মানবহিতৈষী। পরপর তিন বছর তিনি বিশ্বের অনন্য কৃষ্ণাঙ্গ কোটিপতি হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। কারো কারো মতে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলা।
তাঁর মা গৃহপরিচারিকা, বাবা ছিলেন নাপিত। মা-বাবার বিচ্ছেদের কারণে জন্মের পরপরই আশ্রয় হয় নানির কাছে যেখানে দারিদ্র্যের জন্য তাঁকে পোষাকের বদলে ‘আলুর বস্তা’ পড়ে সমবয়সীদের হাসির পাত্র হতে হয়।
তার শৈশব ছিলো খুবই কষ্টের। তিনি একটি কৃষি জমিতে কাজ করতেন। ঠিকমত খেতেও পেতেন না এবং শৈশবেই তিনি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
চার্লি চ্যাপলিন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক ও সুরকার। হলিউড চলচ্চিত্র শিল্পের শুরুর সময় থেকে মধ্যকাল পর্যন্ত তিনি তার অভিনয় এবং পরিচালনা দিয়ে সাফল্যের শিখরে আরোহণ করেন। চ্যাপলিনকে বড় পর্দার শ্রেষ্ঠতম মূকাভিনেতা ও কৌতুকাভিনেতাদের একজন বলে বিবেচনা করা হয়।
সেই চ্যাপলিনের শৈশব কেটেছে বাবা-মা ছাড়া। পিতৃহারা চ্যাপলিনের মা ছিলেন মানসিক হাসপাতালে। তার ভাইকে তাকেই লালন পালন করতে হয়েছিল।
পিতার অনুপস্থিতি ও তার মায়ের অর্থাভাবের জন্য তাকে মাত্র নয় বছর বয়সের পূর্বেই দুইবার একটি কর্মশালায় কাজ করতে পাঠানো হয়েছিল। যখন তার বয়স ১৪ তখন তার মাকে পাগলাগারদে পাঠানো হয়। লন্ডনে অবর্ণনীয় কষ্ট এবং দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়েছেন যিনি সেই তিনিই পৃথিবীর সব দেশের মানুষকে হাসিয়ে ইতিহাসের সেরা কৌতুক অভিনেতা এবং নির্মাতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
জিম ক্যারি কানাডীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন অভিনেতা, কৌতুকাভিনেতা, চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক। কমেডিয়ান হিসেবে কোটি কোটি দর্শকের হৃদয় জয় করেছেন ক্যারি। কিন্তু একসময় জিম ক্যারির থাকার জন্য বাড়ি ছিল না। সে সময় পরিবারসহ তিনি ভক্সওয়াগেন বাসে থাকতেন। তিনি বহু বছর তার বড় বোনের বাসার সামনে তাঁবু টানিয়ে থাকতেন। তার মতে সেই কঠিন সময়ই তাকে বর্তমান জিম ক্যারিতে পরিণত করেছে। তিনি তার অতুলনীয় সেন্স অফ হিউমারের জন্য সুপরিচিত।
জীবনযুদ্ধে পতিত হয়েছিলেন জনপ্রিয় জেমস বন্ড তারকা ড্যানিয়েল ক্রেগ-ও। অভিনয় জীবনের শুরুতে তিনি লন্ডনের একটি বেঞ্চে থাকতেন। বর্তমানে এ অভিনেতার মোট সম্পদের পরিমাণ হয়তো তিনি নিজেও জানেন না।