বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা,‘পরিস্থিতি মারাত্মক’
জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। দীর্ঘদিন ধরে মেগাসিটি ঢাকাও বায়ুদূষণের কবলে। কয়েকদিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় প্রথমদিকেই রয়েছে ঢাকা। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া নয়টার দিকে বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষে ছিল রাজধানী। আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার গড় বায়ুর মান ২৬১। বায়ুর এমন অবস্থাকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়।
ঢাকার দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপসের চেয়ারম্যান আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি হওয়ার পর আশা করা হয়েছিল বায়ুর মান ভালো হবে। কিন্তু তা হলো না। দূষণ পরিস্থিতি সত্যিই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকাগুলোর মধ্যে যেসব এলাকায় বায়ুর মান মারাত্মক দূষিত, সেগুলোর মধ্যে আছে সাভারের হেমায়েতপুর (৩৬৮) ও মাদানি সরণির বেইজ এজওয়াটার (৩১৬) এবং ঢাকার মার্কিন দূতাবাস (২৮৮)।
রাজধানীর বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলোর মধ্যে আছে কলকারখানা ও যানবাহনের দূষিত ধোঁয়া, ইটভাটা, বর্জ্য পোড়ানো। দূষণ রোধে হাঁকডাক এবং নানা ধরনের প্রকল্পও কম হয়নি সরকারি স্তরে। কিন্তু দূষণ কমছে না।
দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ। আবার গত জানুয়ারিতে দূষণের মান ছিল ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ঢাকায় জানুয়ারিতে একাধিক দিন বায়ুর মান ৩০০-এর বেশি হয়েছে। আজ অন্য বিভাগীয় শহরগুলোর বায়ুর মান চট্টগ্রামে ১০০, রাজশাহীতে ১৬৯ ও খুলনায় ১৫৬।
বুধবার আইকিউএয়ারের দেওয়া সতর্কবার্তায় ঢাকাবাসীর উদ্দেশে পরামর্শ, বাইরে বের হলে সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না। আরও একটি পরামর্শ, ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এখন দূষণ পরিস্থিতি যা তাতে ব্যক্তিগত সুরক্ষাই মূল ভরসা। ঘরের বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। জানালায় পর্দা লাগাতে হবে বা অন্য সাধ্য থাকলে বায়ুদূষণ নিরোধক যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। আর সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, তাদের প্রতিশ্রুতি কাজগুলো তারা করুন।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২ দশমিক ৫-এর উপস্থিতি। ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩৭ গুণ বেশি।