বায়িং হাউজের আড়ালে মাদক ব্যবসা, গ্রেপ্তার ৪
দীর্ঘদিন ধরে বায়িং হাউজের আড়ালে চলছিল মাদক ব্যবসা। এমন খবর ছিল মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তাদের কোনোভাবে আটক করা যাচ্ছিল না। অবশেষে চক্রটির চার সদস্যকে হাতেনাতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ইয়াবা ও একটি নতুন গাড়িসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- নজরুল ইসলাম ওরফে সোহেল রানা (৩৪), আল মামুন (৩২), মোহাম্মদ ফারুক ওরফে ওমর ফারুক (৪৬) ও তানিয়া (৩২)।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান সংস্থাটির ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক একে এম শওকত ইসলাম।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানান, মাদক কারবারির এই চক্রটি বায়িং হাউজ এবং আবাসন ব্যবসার আড়ালে টেকনাফ থেকে বিলাসবহুল গাড়িতে ইয়াবার বড় বড় চালান এনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারি ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করে আসছিল। অধিদপ্তর বিষয়টি জানার পর নজরদারিও করছিল, কিন্তু তাদের ধরা যাচ্ছিল না। তাদের বিরুদ্ধে গত মাসে একটি অভিযান চালিয়ে ধরতে ব্যর্থ হওয়ার পর সর্বশেষ সপ্তাহ খানেক আগে আবারও তথ্য আসে। জানা যায়, চক্রটি আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
শওকত ইসলাম বলেন, তারা টেকনাফের একটি রিসোর্টে দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করে হুন্দাই কোম্পানির বিলাসবহুল গাড়ির পাদানির নিচে প্যানেলে বিশেষ কৌশলে মাদক ঢাকা আনছে- এমন খবর পেয়ে মাদকের টিম অভিযান চালায়। পরে হাতিরঝিল এলাকা থেকে এক লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
শওকত ইসলাম আরও জানান, বাসটির বসার পাদানিতে ঢুকিয়ে কৌশলে ঝালাই করে রাখা হয়েছিল। তাদের দেহ ও ব্যাগ তল্লাশি করে কোনো কিছু না পাওয়ায় সন্দেহ হয়। পরে পাদানির নিচে ঝালাই করা অংশটি খুলে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি এড়ানোর জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করত। এভাবে তারা বড় বড় ইয়াবার চালান ঢাকায় সরবরাহ ও বিক্রয় করত। চক্রটির এই চারজনকে ধরতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গাড়িটি সাত কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ধাওয়া করে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের জিজ্ঞসাবাদে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তারা মাদক ব্যবসায়ী অর্জিত অর্থ দিয়ে বায়িং হাউজ ও আবাসন ব্যবসা পরিচালনা করত। মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ মানিলন্ডারিং করা হয়েছে কি না এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
সংবাদ সম্মেলনের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ঢাকা মেট্রো উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহমেদ। এছাড়াও বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।