নতুন সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) আওতায় আগামী তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫ লাখ কর্মী নেবে মালয়েশিয়া।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার জানিয়েছেন, উৎপাদন খাতে কাজ করার জন্য গত সপ্তাহে ৫৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছে।
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ সমিতির সভাপতি জারিনা ইসমাইল বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কর্মীরা উৎপাদন খাতে শূন্যতা পূরণে সাহায্য করবে।’
গত ডিসেম্বর মাসে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষর করা হয়, যা ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
মালয়েশিয়ার অ্যাসোসিয়েটেড চাইনিজ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এসএমই কমিটির চেয়ারম্যান কুং লিন লুং বলেছেন, ‘মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিকরা ধীর গতিতে প্রবেশ করলেও এটি ব্যবসার জন্য আনন্দের সংবাদ। আমার তাদের স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় আছি।’
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া এখনও বিদেশি শ্রমিকদের ওপর খুব নির্ভরশীল। এই মুহূর্তে চরম শ্রমিক সংকটের কারণে অর্ডারগুলো পূরণ করা যাচ্ছে না। তাই, রপ্তানিকারকরা সমস্যায় পড়ছেন।’
কুং লিন লুং আরও বলেন, ‘বিদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য ওয়ান স্টপ রেফারেল সেন্টার থাকা উচিত। শ্রমিক ধরে রাখার প্রক্রিয়া সহজ করা উচিত। মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিকরা একাধিক মন্ত্রণালয় ও সংস্থার আওতাভুক্ত। যদি এটি একটি মন্ত্রণালয় কিংবা একটি সংস্থার অধীনে স্থানান্তর করা যায়, তাহলে আরও ভালো হবে।’
ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্সের সভাপতি তান শ্রী সোহ থিয়ান লাই বলেছেন, ‘মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তারা ভালো কাজের প্রতিশ্রুতির কারণে বাংলাদেশিদের নিয়োগের পক্ষে। বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিক একদিকে যেমন দ্রুত কাজ শিখতে পারেন, অন্যদিকে সহযোগিতামূলক এবং স্থানীয় কাজের পরিবেশে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। বাংলাদেশিরা নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত হয়। তারা অত্যন্ত উৎপাদনশীল। ওভারটাইম কাজ করতে ইচ্ছুক এবং ঝামেলা ছাড়াই যেকোনো বিভাগে স্থানান্তরিত হতে পারে।’
অ্যাসোসিয়েশন অব এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি মালয়েশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট সুরেশ তান বলেছেন, ‘নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশিদের পছন্দ করেন। কারণ তারা পরিশ্রমী, বিশেষ করে যারা উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে কাজ করেন। তারা দ্রুত প্রশিক্ষিত হতে এবং মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তবে, বাংলাদেশিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া মানসম্মত ও স্বচ্ছ হওয়া উচিত।’
মালয়েশিয়ার এসএমই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাতুক ডিং হং সিং বলেন, ‘বাংলাদেশি শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রমী হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের স্বাগত জানিয়েছে। আমাদের সদস্যরা এখানে কাজ করার জন্য তাদের স্বাগত জানায়। কারণ, শ্রমিক ছাড়া আমরা উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারি না।’