বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা জারির আবেদন
করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে জরুরি অবস্থা জারির জন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী। সংবিধানের ১৪১(ক) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে এই জরুরি অবস্থা জারি করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট মো. জোবায়দুর রহমান।
সংবিধানের ১৪১ক(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি-অবস্থা বিদ্যমান রহিয়াছে, যাহাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহা হইলে তিনি (অনধিক একশত কুড়ি দিনের জন্য) জরুরী-অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবেন। (তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার পূর্বেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি-স্বাক্ষর প্রয়োজন হইবে।)
তিন আইনজীবীর আবেদনে বলা হয়েছে, করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করা হয়েছে। এটি অতিমাত্রায় সংক্রামক। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ এবং আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় নয় হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। উন্নত দেশ সমূহ এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, স্পেন, কানাডা ও বেলজিয়াম জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশেও এই সংক্রামক ভাইরাসের কবল থেকে মুক্ত নয়। এ পর্যন্ত ১৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে সনাক্ত করা হয়েছে এবং আক্রান্তদের মধ্যে থেকে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছে। সেই সাথে হাজার হাজার মানুষকে কোয়ারেন্টিনে রয়েছে। এছাড়া সরকার বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই নিয়ম না মেনে জনসম্মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
রিপোর্ট আসছে, নিয়ম না মানার কারণে এই ভাইরাস এখন লোকাল কমিউনিটিতে সংক্রমিত হচ্ছে। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় করোনা আতঙ্কে স্থানীয় লোকজন বিদেশ ফেরত লোকদের বাড়িঘর ঘেরাও করছে। কর্তৃপক্ষ ৩০ জন বিদেশ ফেরত বিচারক এবং ৪ জন ডাক্তারকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সভা, সমাবেশ ও মাহফিল অব্যাহত আছে।
অন্যদিকে, করোনা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সর্বোপরি দেশ ও জাতি একটি অভ্যন্তরিন শৃঙ্খলাহীনতা এবং সংকটের দিকে ধাবিত হতে চলেছে। বিদেশি ক্রেতারা পোশাক খাতের ক্রয় আদেশ বাতিল করছে এবং অর্থনীতির সূচক নিম্নমুখী হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের হিউম্যান বায়ো সিকিউরিটি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চরম হুমকির সম্মুখীন। তাই এইরূপ পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হলে দেশ ও জাতি আসন্ন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে।