বাংলাদেশের সফলতার প্রশংসা করলেন ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা

অর্থনীতি, আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের গত ১৪ বছরের বিস্ময়কর সফলতায় প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বাংলাদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টাডি সার্কেলের একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনের তুলে ধরা বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্য নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন তারা। হাউস অফ লর্ডসের অ্যাটলি কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় শীর্ষ রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সমন্বিত গ্রুপ, কূটনীতিকরা এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতারা যোগ দেন।

বাংলাদেশে যুক্তরাজ্য প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য দূত ও কমনওয়েলথের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এবং কনজারভেটিভ পিয়ার লর্ড পোপট বাংলাদেশের সাফল্যের বিষয়ে বলেন, ‘খুব অল্প সময়ে অবিশ্বাস্য সাফল্যের নাম বাংলাদেশ। বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হল বাংলাদেশ।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ডক্টর গওহর রিজভী বলেন, ‘আজ আমরা সত্যিকারের অগ্রগতির পথে রয়েছি। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা রয়েছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ধারাবাহিকতা।’

বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো-এর লেবার এমপি এবং বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী বলেন, ‘এই প্রতিবেদন বাংলাদেশের বহু অর্জন তুলে ধরেছে। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি হিসেবে আমরা সবাই বাংলাদেশের উন্নয়নে সত্যিই গর্বিত।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আন্তঃসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জন বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ দূত ফিওনা ব্রুস এবং অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ ফর ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিডম অব রিলিজিয়ন বা বিলিফের সভাপতি জিম শ্যানন এমপি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তাকে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে নর্থফিল্ড গ্যারি সামব্রুক এর কনজারভেটিভ এমপি এবং ব্রেন্ট সেন্ট্রাল ডন বাটলারের লেবার এমপিসহ লন্ডন অ্যাসেম্বলি মেম্বার মেরিনা আহমেদ ও উনমেশ দেশাই উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ক্যামডেন নাসিম আলীর মেয়র, ব্রেন্ট কাউন্সিলর পারভেজ আহমেদ এবং ক্যামডেন কাউন্সিলর সমতা খাতুন ও শাহ মিয়াসহ বাংলাদেশি হেরিটেজের স্থানীয় কাউন্সিলররা। লন্ডনের সাবেক অ্যাসেম্বলি মেম্বার মুরাদ কোরেশি এবং সাবেক ক্যামডেন কাউন্সিলর আবদুল হাইও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের আগে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য কনজারভেটিভ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লর্ড ড্যানিয়েল হান্নান স্টাডি সার্কেল সভাপতি জনাব আলীকে হাউস অফ লর্ডস ভ্রমণে নিয়ে যান। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাফল্য এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শ্রমের ছায়া মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট এমপিসহ অনেক সংসদ সদস্যের কাছে সমাদৃত হয়েছে।

এ সময় স্টাডি সার্কেল সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল আলী বলেন,বাংলাদেশের অর্থনীতি গত বছর ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে, যা বিশ্ব অর্থনীতির ‘টাইগার’ খ্যাত দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরের অর্থনীতিকেও ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশের অর্থনীতি অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে ‘বেঙ্গল টাইগার অর্থনীতি’র চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা উচিত।’

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। হলি আর্টিজনে সন্ত্রাসী হামলার পর একমাত্র ইংল্যান্ডই বাংলাদেশে সফর বাতিল করেনি। এটিই প্রমাণ করে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের মজবুত সম্পর্কের বন্ধন। যুক্তরাজ্যে ৮ হাজার বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ রয়েছে। এই রেস্তোরাঁগুলোর দিকে তাকালে মনে হয় প্রতিটি যেন একটি হাই-কমিশন। এর মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও জোরদারের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘সৈয়দ এম আলী এবং স্টাডি সার্কেলকে অভিনন্দন, তারা একটি অসাধারণ প্রতিবেদন তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রার একটি প্রমাণ ভিত্তিক প্রকাশনা।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.