বাংলাদেশের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত
জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন জন কেরি।
এ সময় জন কেরি যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জলবায়ু উদ্যোগে যোগদানেরও আহ্বান জানান যাতে বাংলাদেশ অন্য বৃহৎ নির্গমনকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক উদাহরণ স্থাপন করতে পারে এবং বিশ্ব জলবায়ু প্রক্রিয়ায় অর্থপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে তাদের উৎসাহিত করতে পারে। তিনি গত বছর গ্লাসগোতে কপ-২৬ সম্মেলনের আগে জমা দেয়া উচ্চাভিলাষী ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনের (এনডিসি) জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান এবং এনডিসি লক্ষ্য বাস্তবায়নের উপায় খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের সমর্থনেরও আশ্বাস দেন।
নতুন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করার ঘোষণার জন্য বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়ে বাইডেনের বিশেষ দূত ক্লিন এজ এশিয়া ইনিশিয়েটিভসহ বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা, ক্লিন এনার্জি এবং এনার্জি এক্সেস লক্ষ্যের জন্য মার্কিন সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। জন কেরি বলেন, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অফ এনার্জি রিসোর্সেস বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি ও প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট ল্যাবরেটরির মধ্যে একটি নতুন অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য উন্মুখ হয়ে কাজ করছে এবং পুনর্বীকরণযোগ্য শক্তির বর্ধিত ব্যবহারকে সমর্থন করার জন্য গ্রিডের স্থিতিশীলতা, নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করছে। পেট্রোবাংলার সঙ্গে কার্বন ক্যাপচার, ইউটিলাইজেশন, স্টোরেজ এবং ব্লু হাইড্রোজেন ডেভেলপমেন্টে সহযোগিতা চালুর বিষয়টিও নির্ধারণ করেছে। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে কৃষি উদ্ভাবন মিশন ফর ক্লাইমেটে যোগদান করার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। মার্কিন নেতৃত্বাধীন কৃষি উদ্ভাবন মিশন ফর ক্লাইমেট উদ্যোগে শক্তিশালী উদ্ভাবন বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যা ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের জলবায়ু অর্থায়ন অর্জনে সহায়তা করতে পারে।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসে আমাদের মহাসাগর সম্মেলনে গৃহীত প্রতিশ্রুতির জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান জন কেরি। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য ব্লু-ইকোনমির অধীনে সামুদ্রিক সম্পদের টেকসইকে কাজে লাগানো এবং মাছ ধরার জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনার ঘোষণা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এর আগে জন কেরিকে লেখা একটি চিঠিতে গ্লোবাল মিথেন প্রতিশ্রুতিতে যোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। ড. মোমেন মিথেন নিঃসরণ কমানোর জন্য কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদনশীলতার ওপর যেকোনো বিরূপ প্রভাব প্রশমিত করার জন্য সমালোচনামূলক প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করার আশ্বাসের কথাও কেরিকে স্মরণ করিয়ে দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল মিথেন প্রতিশ্রুতিতে (সিভিএফ) এখন পর্যন্ত একশ’র বেশি দেশ যোগ দিয়েছে এবং তাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
চিঠিতে জন কেরি মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসে নতুন আইনসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাইডেন প্রশাসনের বেশ কয়েকটি পদক্ষেপও তুলে ধরেন।