বন্ধ হচ্ছে `কেয়া’র আরও দুই বিভাগ, বেকার হবে অনেক প্রতিবন্ধী শ্রমিক

বাজার অস্থিতিশীল, ব্যাংকের সঙ্গে হিসাবের অমিল

পাঁচটি কারখানা বন্ধ ঘোষণার পর গাজীপুরের জরুন এলাকায় কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের আরও দুটি বিভাগ স্থায়ীভাবে বন্ধের নোটিস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নোটিসে বলা হয়, আগামী ২০ মে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। কেয়ার এ দুটি বিভাগ হলো নিট কম্পোজিট ডিভিশন ও ইউটিলিটি বিভাগ।

নিট কম্পোজিট ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাক প্রতিবন্ধী জহিরুল ইসলামের দাবি, এই দুটি বিভাগে এক হাজারের মতো বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শ্রমিক কাজ করেন। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে অন্যদের পাশাপাশি তারাও চাকরি হারাবেন।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর কোনাবাড়ী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব জানান, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের চেয়ারম্যানের (নীট কম্পোজিট ডিভিশন) স্বাক্ষরিত একটি নোটিস মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে কারখানার প্রধান ফটকে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়।

নোটিসে লেখা, ‘এতদ্বারা কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের (নিট কম্পোজিট ডিভিশন) ডাইং ও ইউটিলিটি বিভাগের সকল শ্রমিক ও কর্মচারীর অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান বাজার অস্থিতিশীলতা, ব্যাংকের সঙ্গে হিসাবের অমিল, কাঁচামালের অপর্যাপ্ততা এবং ফ্যাক্টরির উৎপাদন কার্যক্রমের অপ্রতুলতার জন্য ডাইং বিভাগের সকল কার্যক্রম আগামী ২০ মে ২০২৫ তারিখ থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষনা করা হলো।’

এ দুটো বিভাগে কর্মরত সব শ্রমিক ও কর্মচারীদের বাংলাদেশ শ্রম আইন ও বিধিমালা অনুসারে সব পাওনা কারখানা বন্ধের ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয় নোটিসে।

এদিকে কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার খবরে দুই বিভাগের শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী শ্রমিকরা মঙ্গলবার কারখানার প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে সাজু মার্কেট এলাকায় জড়ো হয়ে কারখানা খোলার দাবিতে তারা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেন।

রাত ৯টার দিকে গণস্বাক্ষর সংগ্রহের সময় বেশ কয়েকজন প্রতিবন্ধীকে চিৎকার করে কাঁদতে দেখা যায়।

কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের অ্যাডমিন ম্যানেজার শওকত হোসেনও বলেন, ‘আমাদের প্রতি বিভাগে অনেক প্রতিবন্ধী শ্রমিক আছেন।’ তবে এর সঠিক সংখ্যাটি উল্লেখ করতে পারেননি তিনি।


কেয়া কসমেটিক বন্ধ ঘোষণায় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর একই কারণ দেখিয়ে কেয়া গ্রুপের নীট কম্পোজিট গার্মেন্টস ডিভিশন, নীটিং বিভাগ, স্পিনিং ডিভিশন, কটন ডিভিশন ও কেয়া ইয়ার্ন মিলস লিমিটেডের কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.