বছর ঘুরে আবার হাসপাতালে প্রতুল মুখোপাধ্যায়
‘আমি বাংলায় গান গাই, আমি বাংলার গান গাই’ গানের শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা ভালো নেই। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এই প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পীকে রাখা হয়েছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের আইটিইউতে; জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এই শিল্পী। গত বছরও অসুস্থতা নিয়ে শহরের এই হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছিলেন প্রতুল।
এদিকে, সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ইন্দ্রনীল সেন হাসপাতালে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের খোঁজখবর নিয়েছেন। বিভিন্ন চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন হয়েছে। এদিন রাতেও তিনি সংকটজনক অবস্থায় এসএসকেএমের আইসিইউতে ছিলেন।
হাসপাতালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে গান শোনান প্রতুল। ছবি: সংগৃহীত
আনন্দবাজার লিখেছে, এর মধ্যে প্রতুল মুখার্জির শরীরে একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। এরপর তার হার্ট অ্যাটাকও হয়, তিনি আক্রান্ত হন নিউমোনিয়াতেও। হঠাৎ চেতনা হারালে তাকে হাসপাতালের আইটিইউতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। প্রতুলের চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে একটি মেডিকেল বোর্ডও।
শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৪২ সালে বাংলাদেশের বরিশালে। তার বাবা ছিলেন স্কুলশিক্ষক। ১৯৫২ সালে তার স্কুলে যাওয়া শুরু। স্কুলের মঞ্চেই অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছিলেন তিনি। ‘গায়ক অভিনেতা’ হিসেবে একটি স্কুলের নাটকের মঞ্চে আত্মপ্রকাশ করেন প্রতুল।
১৯৬২ সালে তিনি প্রথম গান লেখেন। তারপর এক দশক ধরে বেশ কয়েকটি গণসংগীত রচনা করেছেন। নকশালদের মধ্যে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘সেজদা কমরেড’ নামে।
ব্যাংকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা প্রতুলের প্রথম একক অ্যালবাম ‘যেতে হবে’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৪ সালে।
২০১৬ সালে সিঙ্গুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে যখন ১৪ হাজার কৃষককে তাদের জমি ফেরত দেওয়া হয়, তখন তার কণ্ঠে শোনা গিয়েছিল ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি।
এই শিল্পীর গানের মধ্যে ‘চার্লি চ্যাপলিন’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও আলু বেচো’ শিরোনামের গানদুটো অন্যতম।
‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন প্রতুল। তার অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’, ‘যেতে হবে’, ‘ওঠো হে’, ‘কুট্টুস কাট্টুস’, ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’, ‘তোমাকে দেখেছিলাম’, ‘স্বপনপুরে’, ‘অনেক নতুন বন্ধু হোক’, ‘হযবরল’, ‘দুই কানুর উপাখ্যান’, ‘আঁধার নামে’।
বাংলাদেশে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে প্রতুলেল একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ২০১১ সালের মার্চে। অ্যালবামটির নাম ‘আমি বাংলায় গান গাই’।