ফেরিডুবি: আবারও শুরু হলো উদ্ধার অভিযান

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকসহ ফেরিডুবির ঘটনার ১২ ঘণ্টা পর দ্বিতীয় দিনের মতো আবারও শুরু করা হয়েছে উদ্ধার কার্যক্রম। ফেরিটি তীরে তুলতে কাজ করছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর পন্টুনে শুরু হয় উদ্ধার অভিযান।

ফেরিডুবির ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে পাঁচটি ট্রাক। ট্রাকগুলো ফেরির নিচে বা আশপাশে চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পাঁচটি ট্রাক পদ্মা নদীর বিভিন্ন এলাকায় শনাক্ত করে গতকাল বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার পাঁচ নম্বর ঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে পণ্যবাহী ট্রাকসহ রো রো ফেরি আমানত শাহ কাত হয়ে ডুবে যায়। ফেরিতে থাকা ১৭টি ট্রাকের মধ্যে দুটি কাভার্ড ভ্যান পন্টুনে নামতে সক্ষম হলেও বাকি ট্রাকগুলো ফেরির সঙ্গে পানিতে ডুবে যায়। ফেরিতে ৮-৯টি মোটরসাইকেল ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

দুর্ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ, নৌবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধারকাজে অংশ নেন। তবে গতকাল পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে সকাল ৯টার দিকে শাহ আমানত নামের ফেরিটি পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। মাঝনদীতে ফেরিটি ডান দিকে কাত হতে থাকে। ফেরির চালক দ্রুত ফেরি চালিয়ে পাটুরিয়া ঘাটের দিকে আসেন। পাঁচ নম্বর ঘাটে ফেরি ভেড়ালে দুটি কাভার্ড ভ্যান দ্রুত ফেরি থেকে নামতে পারে। বাকি যান নিয়ে ফেরিটি ডুবে যায়।

সুজন নামের এক যাত্রী জানান, তিনি যশোর থেকে মোটরসাইকেলে করে ঢাকা যাচ্ছিলেন। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরিতে ওঠেন। পাটুরিয়া ঘাটে আসার পর কিছু বুঝে ওঠার আগে ফেরিটি পানিতে ডুবে যায়। তিনি কোনো মতো পন্টুনে উঠে আসেন।

ফেরিতে থাকা ওমর আলী নামের এক ট্রাকচালক বলেন, ফেরিতে ওঠার পর থেকেই ফেরিটি একদিকে হেলে ছিল। বিষয়টি ফেরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানালে তাঁরা বলেন, ঘাটের কাছে পানি কম থাকার কারণে এমনটি হচ্ছে। পরে মাঝনদীতে এসে ফেরিটি আরো ডান দিকে হেলতে থাকে।

বিআইডাব্লিউটিএর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নূরুল আলম বলেন, ডুবে যাওয়া ফেরির ওজন এক হাজার টনের ওপর। আর উদ্ধারকাজে যাওয়া জাহাজ হামজা ৬০ টন নিতে সক্ষম। এ জন্য ফেরিটি উদ্ধার করতে দেরি হচ্ছে। প্রত্যয় নামের যে উদ্ধার জাহাজটি আসছে সেটা ২৫০ টন নিতে সক্ষম। এটি এসে পৌঁছলে ফেরিটি দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

বিআইডাব্লিউটিসির নৌযানের তালিকা অনুযায়ী, আমানত শাহ ১৯৮০ সালে তৈরি। এই ফেরি ৩৩৫ যাত্রী ও ২৫টি যান বহন করতে পারে। সর্বোচ্চ ১০.২৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.