ফিলিস্তিনের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করলেন আব্বাস, তুমুল বিতর্ক

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ঘোষণা দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য হলে তার ডেপুটি হুসেন আল-শেখ ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এই পদক্ষেপ আব্বাসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আল-শেখকে ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার আরেকটি ধাপ বলে মনে করা হচ্ছে, যদিও তার প্রতি জনসমর্থন অত্যন্ত সীমিত।

রোববার (২৬ অক্টোবর) মাহমুদ আব্বাস ঘোষিত লিখিত ডিগ্রিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট মারা গেলে বা দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। এ সময়ের মধ্যেই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘোষণায় অনুযায়ী যদি “বিশেষ পরিস্থিতির কারণে” নির্বাচন আয়োজন সম্ভব না হয়, তাহলে ফিলিস্তিনি সেন্ট্রাল কাউন্সিল একবারের জন্য এই অন্তর্বর্তী মেয়াদ বাড়াতে পারবে।

 

এই ঘোষণার পরপরই বিরোধী দল ও সমালোচকরা একে সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে নিন্দা করেছেন। ফিলিস্তিনি মৌলিক আইনে বলা আছে, প্রেসিডেন্টের মৃত্যু বা পদত্যাগের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টের স্পিকার (যিনি ২০০৬ সালে হামাস থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন) প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন।
কিন্তু বর্তমানে পার্লামেন্ট কার্যত অচল এবং নতুন কোনো নির্বাচন হয়নি। এই শূন্যতার সুযোগে আব্বাস সম্প্রতি ভাইস-প্রেসিডেন্টের পদ সৃষ্টি করেন।

হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, “ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের এই একতরফা পদক্ষেপ মৌলিক আইনের লঙ্ঘন এবং এটি কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার জন্য রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বিকৃত করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হামাস জাতীয় ঐক্যের কাঠামোর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার চালিয়ে যাবে এবং ফিলিস্তিনি ইস্যুর অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করবে।’

চলতি বছরের এপ্রিলে আল-শেখকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) নির্বাহী কমিটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। হামাস তখনই এ সিদ্ধান্তকে ক্ষমতার একচেটিয়া দখল বলে সমালোচনা করেছিল।

৬৩ বছর বয়সী হুসেন আল-শেখ দীর্ঘদিন ধরে আব্বাসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তিনি পূর্বে ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা সমন্বয় বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ইসরায়েলি সামরিক নেতৃত্ব ও মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখেন।

তবে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা অত্যন্ত কম। ২০২২ সালে প্যালেস্টাইন পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলে আল-শেখ মাত্র ৩ শতাংশ ভোট পেতেন।

২০১২ সালে এক নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়, যা পরবর্তীতে রহস্যজনকভাবে প্রত্যাহার করা হয়। ফরেন পলিসি ম্যাগাজিন সম্প্রতি প্রকাশ করেছে যে তার বিরুদ্ধে দাবি প্রত্যাহার নিশ্চিত করার জন্য চুপ থাকার জন্য এক লাখ ডলার প্রদান করা হয়।

You might also like

Comments are closed.