বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে শুটিং করতে চান নন্দিত নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বৃহস্পতিবার রাতে দীর্ঘ এক ফেসবুক পোস্টে এমনটাই জানান তিনি। তার মতে, এমন আইকনিক জায়গায় যেকোনো নির্মাতাকেই শুটিংয়ের জন্য অনুমতি দেওয়া উচিত। তাতে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য আরো সুন্দরভাবে ফুটে উঠবে।
অস্ট্রেলিয়ার উদাহরণ টেনে ‘টেলিভিশন’ নির্মাতা লেখেন, গণমাধ্যমে সিডনি অপেরা হাউস ও হারবার ব্রিজ এত বেশি উঠে এসেছে যে এখন অস্ট্রেলিয়ার নাম উচ্চারিত হলেই সবার চোখে এগুলোর ছবি ভাসে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সরকার যদি এসব স্থানে ছবি তোলা কিংবা শুটিং নিষিদ্ধ রাখত, এমনটা হতো না।
ফারুকী লিখেছেন, “আমাদের একটা সংসদ ভবন আছে। যেটা সারা পৃথিবীতে একটা আইকনিক স্ট্রাকচার হিসেবে আমরা হাজির করতে পারতাম। কিন্তু আপনি সেখানে শুট করতে পারবেন না, কারণ সেটা কেপিআই জোন। বিশেষ অনুমতি নিয়ে শুট করা সম্ভব, যেটা অনেকের পক্ষেই পাওয়া কঠিন। তাই বলি, আপনি আপনার দেশের সেরা জায়গাগুলোতে যদি শুট না করতে দেন, তাহলে তো আপনার আফসোস করা উচিত না যে ‘তোমরা বাংলাদেশকে প্রপারলি দেখাও না’।”
হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানগুলো অন্য দেশের নির্মাতারা নান্দনিকরূপে তুলে ধরেন। তুলনায় বাংলাদেশে মুসলিমদের ধর্মীয় আচার সেভাবে পর্দায় উঠে আসে না। ফারুকী তার পাঠকদের কাছে প্রশ্ন রেখে আরো লেখেন, ‘আমার (ছবির) একটা দৃশ্যের জন্য বাইতুল মোকাররম মসজিদের ভেতরে শুট করা দরকার, যেখানে দেখা যাবে হাজার হাজার লোক একসাথে জুমা আদায় করছে। একটু জোগাড় করে দিতে পারবেন? আপনি মসজিদে শুট করতে দেবেন না, কিন্তু চাইবেন আপনার ধর্মের সুন্দর রিচুয়ালগুলা মানুষ জানুক, সেটা কিভাবে হবে? আপনার প্রার্থনার সুন্দর এবং পবিত্র জায়গার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে সেটার সৌন্দর্য কমে না, পবিত্রতাও কমে না। বরং অনেকের কাছে সে সৌন্দর্য পৌঁছানোর একটা রাস্তা হয়। সংসদ ভবন বা এই রকম বিশেষ স্থাপনার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে এর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। আজকাল গুগল ম্যাপেই সব টার্গেট দেখা যায়। শুটিংয়ের ফুটেজ থেকে ছবি নিয়ে নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তৈরি করতে হয় না।’
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিভাবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে শুটিংয়ের বন্দোবস্ত হয়, সেই তথ্যও দিলেন ফারুকী। কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়ে লিখেছেন, ‘দয়া করে শুটিংয়ের জন্য সব কিছু উন্মুক্ত করে দিন। একটা ফিল্ম কমিশন গঠন করেন, যেখানে লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক থাকবে। যার যেখানে শুট করা প্রয়োজন, সেটা উল্লেখ করে ওই কমিশনে আবেদন করবে। সাথে নির্ধারিত ফি-ও জমা দেবে। এবং তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের অনুমতি দিয়ে দেওয়া হবে। সাথে ধরিয়ে দিতে পারেন লোকেশনের স্পেপিসিক নিয়ম-কানুন। ব্যস, সব কিছু সুন্দর একটা সিস্টেমে চলে আসল। সারা পৃথিবীতেই এই ফিল্ম কমিশন এবং লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক আছে। দয়া করে আমাদের এখানেও এটা চালু করুন।’