প্রিগোজিনের মৃত্যু নিশ্চিত করল রাশিয়া

রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। বুধবার সন্ধ্যায় রাশিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১০ জন নিহত হয়েছিলেন। সেই উড়োজাহাজের যাত্রীদের তালিকায় প্রিগোজিনের নাম ছিল।

নিহতদের ডিএনএ পরীক্ষায় প্রিগোজিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে রোববার রাশিয়ার কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটি বলেছে, নিহত ১০ জনেরই পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের তালিকায় যাদের নাম ছিল, তাদের সঙ্গে নিহতদের মিল রয়েছে।

এক সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের খাবার সরবরাহকারী ছিলেন প্রিগোজিন। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে পুতিনের পৃষ্ঠপোষকতায় রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী ওয়াগনার গ্রুপ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। এ গ্রুপের সদস্যরা রাশিয়া সমর্থক আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষে দায়িত্ব পালন করছে।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর পক্ষে লড়াই করেন ওয়াগনার যোদ্ধারা। তাদের হাত ধরে এই যুদ্ধে মস্কোর বড় সফলতা এসেছিল। তবে রুশ সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৩ জুন বিদ্রোহ ঘোষণা করেন প্রিগোজিন। ঘটনাটি ছিল ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর পুতিনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। পরে অবশ্য বিদ্রোহ থেকে পিছু হটেছিলেন প্রিগোজিন। সে সময় ওয়াগনারের ওই বিদ্রোহকে ‘পিঠে ছুরি মারার মতো’ বলে আখ্যা দেন পুতিন। অনেক বিশ্লেষকের আশঙ্কা ছিল, বিদ্রোহের পরিণতি মোটেও ভালো হবে না প্রিগোজিনের জন্য। কারণ, পুতিন তার শত্রুদের ছেড়ে দেন না।

এরপর বিদ্রোহ বন্ধের সমঝোতার অংশ হিসেবে ওয়াগনার যোদ্ধাদের রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশ বেলারুশে পাঠানো হয়। প্রিগোজিনকেও বেলারুশে দেখা গিয়েছিল। এর মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন তিনি। মস্কো সফরে যাওয়া কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠকে তার উপস্থিতির খবরও গণমাধ্যমে এসেছিল।

এর মধ্যে গত বুধবার সন্ধ্যায় প্রিগোজিনের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ‘এমব্রেয়ার লিগ্যাসি’ রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজে প্রিগোজিন ও তার ডান হাত হিসেবে পরিচিত দিমিত্রি উতকিনসহ সাতজন যাত্রী ছিলেন। আর ক্রু ছিলেন তিনজন। তাদের সবাই নিহত হন।

এ ঘটনার পরদিন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভাষণে পুতিন বলেছিলেন, প্রিগোজিনকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চিনতেন। প্রিগোজিন মেধাবী ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে তিনি মন্দ কপাল নিয়ে এসেছিলেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.