প্রসাধনীর দাম বেশি, কমেছে ক্রেতা
ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। কেনাকাটার ভিড় লেগেছে রাজধানীর মার্কেটগুলোতে। রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মতো অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডির মার্কেটগুলোতেও জমে উঠেছে বেচাকেনা। এখানে জামা-কাপড়ের দোকানগুলোতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও মেয়েদের প্রসাধনীর দোকানগুলো একেবারে ফাঁকা। এর কারণ হিসেবে দোকানিরা বলছেন, প্রসাধনীর দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা কমে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ‘সীমান্ত সম্ভারে’ যেসব ক্রেতা আসছেন তাদের বেশিরভাই নিজস্ব গাড়িতে আসছেন। আর ‘সীমান্ত স্কয়ারে’ আসা ক্রেতাদের বেশিরভাগই রিকশা অথবা বাইকে আসছেন। মূলত সীমান্ত স্কয়ারে মধ্যবিত্ত আর সীমান্ত সম্ভারে উচ্চবিত্ত ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া আশেপাশের নামি-দামি ব্রান্ডের শো-রুমগুলোতেও উচ্চবিত্তদের ভিড় চোখে পড়েছে।
সীমান্ত স্কয়ারে বিউটি প্রোডাক্ট ব্র্যান্ড ‘ফ্লোমার’ এর কর্মকর্তা মো. শাহনেওয়াজ খান বলেন, গত বছরের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় মেয়েদের প্রসাধনীতে চাহিদা কমেছে। অন্য বছর এসময় আমরা কারো সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেতাম না। আর এবার বসে আছি। প্রসাধনী পণ্যে ভ্যাট ও ট্যাক্স বেশি আরোপ হওয়ায় গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন গুণ দাম বেড়েছে। এটাই এই পণ্যের চাহিদা কমার কারণ।
ঈদ শপিংয়ে সীমান্ত সম্ভারকে বেছে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে রায়েরবাজার থেকে ঈদ শপিংয়ে আসা দম্পতি রাহাত ও সীথি বলেন, শপিংয়ে আসার আগে আমরা দুজনে অনলাইনে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট দেখে এসেছি। আর যে গুলো দেখেছি তার সবই সীমান্ত সম্ভারে আছে। এজন্য এখানে আসা। এছাড়া হাতের কাছে যদি সবকিছু পাওয়া যায় তাহলে এত যানজট ঠেলে বসুন্ধরায় যাওয়ার কোনো কারণ আমি দেখি না। একটু আরামে শপিং করাটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
সীমান্ত স্কায়ারে শপিংয়ে আাসা রিয়াদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বাসা ধানমন্ডির ১৫ নাম্বারের ভেতরে। আমি প্রতিবার আশপাশের যে শপিংমলগুলো আছে সেগুলো থেকে কেনাকাটা করি। এতে আমার সময় বাঁচে।
বসুন্ধরা বা সীমান্ত সম্ভারে না গিয়ে সীমান্ত স্কয়ারকে বেছে নেওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, সীমান্ত সম্ভারে গিয়েছিলাম। ওখানে একটু ভিড় বেশি। আবার দামও বেশি। কিন্তু এখানে ভিড়ও কম, দাম হাতের নাগালের মধ্যে রয়েছে।
সীমান্ত সম্ভার ও সীমান্ত স্কয়ার পাশাপাশি হওয়ায় পণ্যের দামের পার্থক্য খুব একটা লক্ষ্য করা যায়নি। দুই জায়গাতে প্রায় একই রকম দাম লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে ধানমন্ডির আড়ং, ইস্টাসি ও বেশ কয়েকটি দামি ব্র্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, এসব শোরুমে এখনো তুলনামূলক ভিড় কম। তবে যারা এখানে আসছে তাদের বেশিরভাগ উচ্চবিত্ত।
ধানমন্ডিতে উদ্বোধন হওয়া নতুন আড়ংয়ের শো-রুম ঘুরে দেখা যায়, এখানে সবধরনের প্রোডাক্ট আছে। মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত সব শ্রেণির মানুষই এখান থেকে সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করতে পারছেন। তবে চোখ আটকানোর মতো কিছু নিতে গেলে যেতে হবে আড়ংয়ের এই শো-রুমের স্টোরি বাই আড়ং সেকশানে। সেখানে একটি সিঙ্গেল পিসের দাম শুরু হয় ১৮ হাজার টাকা থেকে। আবার একটি শাড়ির দাম ৫০ হাজার টাকাও রয়েছে। এই সেকশনে নয় হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে অনেক প্রোডাক্ট রয়েছে।
আড়ং থেকে শপিং করে বের হয়ে যাওয়ার সময় কথা হয় সুমি নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, আড়ং থেকে শপিং করা হয় এজন্য যে, এখানে একটা বিশ্বাস কাজ করে, যা অন্য কোথাও করে না। প্রতিবারের মতো এবারও তাই এখান থেকে কেনাকাটা করলাম। এখানে এক ছাদের নিচে চাহিদা মতো সব পাওয়া যায়।