প্রয়াণের আট বছর আজ
জীবনের ৭৫ বছরের মধ্যে পাঁচ দশকের বেশি সময় নায়করাজ রাজ্জাক উৎসর্গ করেছিলেন সিনেমাকে। শুধু নায়ক হিসেবেই নয়, পুরো ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবক হিসেবে তিনি ছিলেন অনন্য
ঢালিউডের নায়করাজ রাজ্জাক নেই, তবু তার উপস্থিতি রয়ে গেছে এক দীর্ঘ ছায়ার মতো। জীবনের ৭৫ বছরের মধ্যে পাঁচ দশকের বেশি সময় তিনি উৎসর্গ করেছিলেন সিনেমাকে। শুধু নায়ক হিসেবেই নয়, পুরো ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবক হিসেবে তিনি ছিলেন অনন্য।
আজ এই মহান অভিনেতার প্রয়াণ দিবস। ২০১৭ সালের আজকের দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। এরই মধ্যে কেটে গেছে রাজ্জাকহীন ঢালিউডের আট বছর।
সাংগঠনিকভাবে বিশেষ কোনো আয়োজন না থাকলেও পরিবারিকভাবে দিনটি পালন করা হয়।
নায়করাজ রাজ্জাকের পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক। জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি, কলকাতার নাকতলা এলাকায়। অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে বম্বেতে গেলেও সফল হননি। পরে কলকাতায় ফিরে মাত্র ২০ বছর বয়সে বিয়ে করেন।
কলকাতার দাঙ্গার সময় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি।
এরপর ১৯৬৪ সালে ঢাকায় সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন, ১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’-এর মাধ্যমে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ।
তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন রাজ্জাক। বাণিজ্যিক ছবি থেকে গল্পনির্ভর চলচ্চিত্র—সব ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সমান সফল। তার উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে—‘বেহুলা’, ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘এতটুকু আশা’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘অবুঝ মন’, ‘রংবাজ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘অশিক্ষিত’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’।
অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাণেও ছিলেন দক্ষ। পরিচালনা করেছেন মোট ১৬টি চলচ্চিত্র।
তার অর্জনে রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, স্বাধীনতা পদক (২০১৫) লাভ করেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন পাঁচ বার। পেয়েছেন আজীবন সম্মাননাও। তবে পুরস্কারের বাইরেও তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিল সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা।
প্রয়াণের আট বছর পরও ঢাকাই সিনেমায় তার শূন্যতা স্পষ্ট। নায়করাজ রাজ্জাক রয়ে গেছেন বাংলার মানুষের হৃদয়ে চিরকালীন নায়ক হয়ে।

Comments are closed.