পুলিশ, র্যাব ও আনসারের নতুন পোশাক চূড়ান্ত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক (ইউনিফর্ম) পরিবর্তসনসহ পুলিশ বাহিনী সংস্কারের দাবি উঠে। ইতোমধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন পুলিশ বাহিনীর জন্য আলাদা কমিশন গঠনসহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। এর মধ্যেই পুলিশ, র্যাব ও আনসার বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হল।
সোমবার (২০ জুলাই) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র পদেষ্টা বলেন, ‘পোশাকের সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। আমরা বিজিবির জন্য একটি, পুলিশের জন্য একটি এবং আনসারের জন্য একটি পোশাক নির্ধারণ করেছি। তিনটি পোশাকই আজকে নির্ধারণ করেছি।’ পর্যায়ক্রমে বাহিনীগুলোর সদস্যদের নতুন পোশাক দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কেন পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে সবারই মন মানসিকতা সবকিছু পরিবর্তন হতে হবে। আপনারা (সাংবাদিক) একটা ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জোর দেবেন সেটা হলো দুর্নীতি। দেশ থেকে যদি দুর্নীতি দূর করতে পারেন, তবে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে।’
পোশাক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অর্থের প্রয়োজন হবে না জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘পোশাক যখন দেওয়া হচ্ছে, এভাবে আস্তে আস্তে আমরা দিয়ে দেব। যেন বড় ধরনের সমস্যা না হয়।
যে তিন রঙের পোশাক : বৈঠকে ১৮ ধরনের পোশাকের ট্রায়াল দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে পাঁচ রঙের পাঁচটি পোশাক নির্ধারণ করা হয়। পরে সেই পাঁচজনের মধ্য থেকে তিনটি পোশাক নির্বাচন করে কমিটি। পুলিশের পোশাকের রং আয়রন, র্যাবের পোশাকের রং গ্রিন অলিভ, আনসারের পোশাকের রং গোল্ডেন হোয়াইট বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১১ আগস্ট পুলিশের পোশাক ও লোগো পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ই সময় তিনি বলেন, ‘পুলিশের পোশাক-লোগো সব পরিবর্তন করা হবে। অনেকের মন ভেঙে গেছে, এই ইউনিফর্ম পরে পুলিশ আর কাজ করতে চাইছে না। খুব দ্রুতই তা পরিবর্তন করা হবে। এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীবলেন, ‘পুলিশ কমিশন হওয়া উচিত। সেই কমিশনের অধীনে পুলিশ পরিচালিত হবে। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের অধীনে থাকবে না। পুলিশকে যেন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৭ দিন পর্যন্ত পুলিশকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এরপর এই বাহিনীটিকে সচল করতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। তারই অন্যতম পোশাক পরিবর্তনের উদ্যোগ। সরকার পতনের পরদিন থেকে পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন। তখন ইউনিফর্ম পরে দায়িত্ব পালনে অস্বস্তির কথাও জানিয়েছিলেন পুলিশ সদস্যরা।