পিজ্জা’র একপাশে ভারত একপাশে পাকিস্তান, আছে বিশেষ বৈশিষ্ট্যও

বিশ্বখ্যাত কফি ব্র্যান্ড স্টারবাকসের সঙ্গে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে করাচিভিত্তিক স্থানীয় ক্যাফে সাত্তার বকশ। প্রায় ১২ বছর ধরে চলা ট্রেডমার্ক মামলা শেষে পাকিস্তানের আদালতের রায় গেছে এই দেশীয় ব্র্যান্ডের পক্ষে। আইনি জয় যেমন সাড়া ফেলেছে, তেমনি আলোচনায় এসেছে তাদের অভিনব মেনু আর ব্যঙ্গাত্মক নামকরণের ধরন।

বিশেষ করে এই ক্যাফের দুটি পদ সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি কেড়েছে—‘বেশরম বার্গার’ ও ‘লক পিজ্জা’। খাবারের সাধারণ ধারা ভেঙে নামের মধ্যেই রাখা হয়েছে মজার ছলচাতুরী আর গভীর বার্তা।

‘বেশরম বার্গার’ আসলে প্রচলিত কোনো বার্গার নয়। এখানে বান (পাউরুটি) ব্যবহার করা হয়নি; বরং একেবারেই ভিন্ন আঙ্গিকে সাজিয়ে প্লেটে পরিবেশন করা হয়। রুটি দিয়ে ঢাকা না থাকায় নাম রাখা হয়েছে ‘বেশরম বার্গার’। তরুণদের কাছে এটি শুধু খাবার নয়, বরং প্রচলিত ধারা ভাঙার প্রতীক। অনেকে একে বিদ্রোহী রুচি ও ভিন্ন চিন্তার প্রকাশ হিসেবেও দেখছেন।

অন্যদিকে, ‘লক পিজ্জা’ সরাসরি রাজনৈতিক ব্যঙ্গের বহিঃপ্রকাশ। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপড়েনকে সামনে রেখে তৈরি এই পিজ্জার একপাশ সম্পূর্ণ নিরামিষ, অন্যপাশ আমিষ। এক প্লেটের ভেতর যেন ফুটে উঠেছে দুই দেশের সীমান্ত বিভাজন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতীকী ছবি। এ কারণে এই পিজ্জা তরুণদের কাছে যেমন রসনার আনন্দ দিয়েছে, তেমনি আড্ডায় আলোচনারও বিষয় হয়ে উঠেছে।

২০১৩ সালে দুই তরুণ উদ্যোক্তা—রিজওয়ান আহমদ ও আদনান ইউসুফ প্রতিষ্ঠা করেন সাত্তার বকশ। শুরুতে নাম ও লোগো নিয়ে বিতর্ক থাকলেও খুব দ্রুত খাবারের অভিনবত্ব আর সাহসী উপস্থাপনার জন্য জায়গা করে নেয় তরুণদের মনে।

মালিকদের ভাষায়, সাত্তার বকশ কেবল একটি ক্যাফে নয়, বরং সংস্কৃতি, রসিকতা আর সামাজিক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার এক মঞ্চ। ক্যাফের সাজসজ্জা থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন—সবকিছুতেই মিশে আছে স্থানীয় সৃজনশীলতার ছাপ।

আজ করাচির তরুণ প্রজন্মের কাছে সাত্তার বকশের ‘বেশরম বার্গার’ ও ‘লক পিজ্জা’ কেবল খাবারের পদ নয়; এগুলো হয়ে উঠেছে ভিন্ন স্বাদ খোঁজার এক যাত্রা এবং সমাজ-রাজনীতিকে ব্যঙ্গ করার সৃজনশীল প্রতীক।

 

You might also like

Comments are closed.