পাচার করা অর্থ ফেরাতে সর্বোচ্চ জোর দিচ্ছে সরকার

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের টানা প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলে দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। এসব টাকা ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ জোর দিচ্ছে। দেশের খেটে খাওয়া মানুষের এসব টাকা ফিরিয়ে আনতে যা যা করার সরকার সবই করছে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সমসাময়িক বিষয়ে ব্রিফ করছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা উপ- প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, পাচার করা অর্থ ফেরাতে যা করা দরকার এই সরকার সব করছে। টপ কনসালটেন্সি এজেন্সিগুলোর সাথেও আলাপ চলছে। প্রধান উপদেষ্টার এবারের নিউজিল্যান্ড সফরের আলোচনায় অন্যতম বিষয় ছিল পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা।

শফিকুল আলম বলেন, যে টাকা চুরি হয়েছে তা  খেটে খাওয়া মানুষের। অনেক উন্নত দেশে এই টাকা চলে গেছে। ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক নেতাদের সাথে বারবার এই প্রসঙ্গটি তুলছেন। এ বিষয়ে সুইজারল্যান্ডের মন্ত্রীর সাথে আলাপ হয়েছে। তিনি বাংলাদেশে আসার কথাও বলেছেন। তবে এটি ধীরগতির প্রক্রিয়া বলে জানান তিনি।

প্রেস সচিব বলেন, ১৬ বিলিয়ন ডলার করে প্রতি বছর পাচার হয়েছে। বিষয়টি হোয়াইট পেপারে (অর্থনীতির শ্বেতপত্রে) উঠে এসেছে। সেই টাকা কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায় এবং কত অল্প সময়ে- এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ সময় প্রেস সচিব দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিও নিয়েও কথা বলেন। জানান, গার্মেন্টসের এক্সপোর্ট কমেনি। ফ্যাক্টরি বন্ধ হবে, খুলবে। তবে সরকার দেখে যে দেশের এক্সপোর্ট বাড়ছে কি না। বাংলাদেশের এক্সপোর্ট সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ৭ শতাংশ, অক্টোবরে ১৬/১৮ শতাংশ, নভেম্বরে প্রায় ২২ শতাংশ। ডিসেম্বরে ১৮ শতাংশের মতো।

কিছুটা অস্থিরতার কথা স্বীকার করে প্রেস সচিব বলেন, যেসব ফ্যাক্টরির মালিক পালিয়ে গেছে, তাদের পুরো চাপটা সরকারের ওপর দিয়ে গেছেন। ব্যাংকগুলো থেকে চুরি করে যা যা ছিল সব নিয়ে পালিয়ে গেছে। শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে তারা মজা দেখছেন। এক্সপোর্ট বাড়া মানে জব তৈরি হওয়া। ওভার অল এক্সপোর্ট আমাদের বাড়ছে। আমরা এক্সপোর্টের ফিগারের ব্যাপারে কোনো গড়মিল করছি না। শেখ হাসিনার আমলে এর গড়মিল হয়েছে।

প্রেস সচিব জানান, দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় প্রধান উপদেষ্টার অংশগ্রহণ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটি একটি ঐতিহাসিক সফর ছিল। সভায় কমপক্ষে ৪৭টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সুইজারল্যান্ড সফর বড় একটি অর্জন। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে প্রথমেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য সবকিছু করার কথা জানিয়েছেন তিনি।

প্রেস সচিব বলেন, জার্মানি ইউরোপের ক্ষমতাধর দেশগুলোর একটি। বৈঠকে ওলাফ শলৎস স্ব-উদ্যোগে বাংলাদেশে বিজনেস ডেলিগেশন, স্পেশাল ডেলিগেশন পাঠানোর কথা জানিয়েছেন। তারা এসে নীতি-নির্ধারক ও দেশের বাণিজ্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন। আমরা মনে করি এর মাধ্যমে জার্মানির সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.