ডেনমার্কে পবিত্র কোরআন পোড়ানো, ছেঁড়া বা অমর্যাদাকর কোনো কাজ করা যাবে না, করলেই হবে জরিমানা বা জেল। ডেনমার্কের পার্লামেন্টে এ নিয়ে একটি বিল পাস হয়েছে। ফলে এই উত্তর ইউরোপীয় দেশে পবিত্র কোরআন পড়ানো, ছেঁড়া বা অমর্যাদাকর আচরণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গন্য হবে। বিলের পক্ষে ৯৪ ও বিপক্ষে ৭৭টি ভোট পড়ে।
বিলে বলা হয়েছে, “একটি স্বীকৃত ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ বই বা লেখার প্রতি অন্যায্য আচরণ করা যাবে না। ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো, ছেঁড়া বা অমর্যাদার জন্য জরিমানা বা দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পড়ানো নিয়ে যদি ভিডিও প্রচার করা হয়, তাহলে অপরাধীর কারাদণ্ড হবে।”
ডেনমার্কের বিচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডেনমার্কের বিরুদ্ধে জঙ্গি আক্রমণের সম্ভাবনা কম করার জন্য এই বিল পাস করা হয়েছে।
এই আইন ধর্মগ্রন্থের বিদ্রুপ, অসম্মান বন্ধ করতে চেয়েছে। বিচারমন্ত্রী পিটার হুমেলগার্ড বলেছেন, ‘আমাদের দেশ ও দেশের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই হবে। সেজন্যই আমাদের এই ব্যবস্থা নেয়া জরুরি ছিল।’কয়েকমাস আগেই ডেনমার্ক ও সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানো নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন দেখা দেয়।
প্রচুর দেশ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে। ইরাকে ডেনমার্কর দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
তবে এই বিল পাশ হওয়ায় দক্ষিণপন্থি ও অভিবাসী-বিরোধী ডেনমার্ক ডেমোক্র্যাটস পর্টির নেতা ইনগের স্টর্জবার্গ বেশ ক্ষুদ্ধ। তিনি বলেছেন, ‘ইতিহাস আমাদের কড়া পরীক্ষা নেবে এবং তার কারণও আছে।’ তার প্রশ্ন, ‘আমরা আমাদের মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করলাম, সেটাও কি বাইরের থেকে চাপের মুখে পড়ে?’ বামপন্থিরাও এই সিদ্ধান্তের বিরোধী।
বামপন্থি সোস্যালিস্ট পিপলস পার্টির নেতা কারিনা লোরেন্টজেন বলেছেন, “ইরানের কোনো নাগরিকের কোনো কাজে ডেনমার্ক যদি মর্মাহত হয়, তাহলে ইরান কি তাদের আইন বদল করবে? পাকিস্তান করবে? সৌদি আরব কি আইন পরিবর্তন করবে? উত্তর হলো, না।”
এই বিলটি প্রথমে অগাস্টে পেশ করা হয়। তারপর একবার তা সংশোধন করা হয়। বিল আইনে পরিণত হওয়ার আগে ডেনমার্কের রানির সই দরকার হয়। সেই সই এই মাসের শেষে হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।