পবিত্র কোরআনে আত্মীয়তার সৌহার্দ্য রক্ষার গুরুত্ব

পবিত্র কোরআন মানবজাতির জন্য এক পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। মহাসমুদ্রে আলোর প্রদীপ। এ মহান গ্রন্থে আল্লাহ তাআলা আমাদের জীবন পরিচালনার জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ঈমান, সৎকর্ম, আত্মীয়তার সৌহার্দ্য রক্ষা করার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

এটি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাবলিগ কার্যক্রম ও তার প্রতি মক্কার কাফেরদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কেও শিক্ষা দেয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ذٰلِکَ الَّذِیۡ یُبَشِّرُ اللّٰہُ عِبَادَہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ؕ قُلۡ لَّاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ اَجۡرًا اِلَّا الۡمَوَدَّۃَ فِی الۡقُرۡبٰی ؕ وَمَنۡ یَّقۡتَرِفۡ حَسَنَۃً نَّزِدۡ لَہٗ فِیۡہَا حُسۡنًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ شَکُوۡرٌ

অর্থ: এরই সুসংবাদ আল্লাহ তার সেই সকল বান্দাকে দান করেন, যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে। (হে রাসূল! কাফেরদেরকে) বলে দাও, আমি এর (অর্থাৎ তাবলিগের) বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাই না আত্মীয়ের সৌহার্দ্য ছাড়া। যে-কেউ সৎকর্ম করবে আমি তার জন্য সে সৎকর্মে অতিরিক্ত সৌন্দর্য বৃদ্ধি করব। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, অত্যন্ত গুণগ্রাহী। (সুরা আশ্‌-শুরা ২৩)

মক্কার কুরাইশদের সাথে মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে আত্মীয়তা ছিল তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে, আমি তোমাদের কাছে তাবলিগের জন্য কোনো পারিশ্রমিক চাই না, কিন্তু অন্ততপক্ষে তোমাদের সঙ্গে আমার আত্মীয়তার বিষয়টা তো লক্ষ রাখ এবং সেই খাতিরে আমাকে কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাক ও আমার কাজে বাধা সৃষ্টি হতে নিবৃত্ত থাক। সেই সৎকর্মের কারণে যতটুকু প্রতিদান তার প্রাপ্য তা অপেক্ষা বেশি দেব।

এ আয়ত থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই : ১. ঈমান ও সৎকর্মের গুরুত্ব। ঈমান ও সৎকর্মই আল্লাহর নিকটপ্রিয়। যারা এগুলো অবলম্বন করবে, তাদের জন্য আল্লাহ সুসংবাদ রাখেন। ২. আত্মীয়তার মূল্যায়ন। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবলীগের বিনিময়ে পারিশ্রমিক চাননি, বরং আত্মীয়তার খাতিরে তার প্রতি সহনশীল হওয়ার আহ্বান করেছেন।

৩. সৎকর্মের বহুগুণ প্রতিদান আল্লাহ দান করেন। যারা ভালো কাজ করবে, আল্লাহ তাদের প্রতিদান বহুগুণে বৃদ্ধি করবেন। ৪. আল্লাহর ক্ষমাশীলতা। আল্লাহ তাআলা অতীতের ভুল ক্ষমা করেন এবং সৎকর্মের মাধ্যমে বান্দাদের প্রতি আরও দয়া প্রদর্শন করেন।

আলোচ্য আয়াত আমাদের আত্মীয়তার বন্ধন সুদৃঢ় করার শিক্ষা দেয়। পাশাপাশি সৎকর্মের প্রতি উৎসাহিত করে এবং আল্লাহর অসীম দয়ার প্রতি আস্থা রাখার নির্দেশনা দেয়। আমরা যদি ঈমান ও সৎকর্মে অটল থাকি এবং আত্মীয়তার সৌহার্দ্য বজায় রাখি, তবে আল্লাহ আমাদের জন্য অনন্য সৌন্দর্যময় পুরস্কার প্রস্তুত রেখেছেন। আল্লাহর এ বার্তাগুলো আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পথনির্দেশক হয়ে উঠুক।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.