নাম কাজী আনোয়ারের, তবে সেবার ৩ শতাধিক বই আবদুল হাকিমের
সেবা প্রকাশনীর স্পাই থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের তিন শতাধিক বই শেখ আবদুল হাকিমের লেখা। ওই বইগুলো পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তার কাছ থেকে লিখিয়ে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেন নিজের নামে প্রকাশ করতেন। কপিরাইট অফিস সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে মালিকানা স্বত্ব দাবি করে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন শেখ আবদুল হাকিম।
তিন দফা শুনানি, দুই পক্ষের যুক্তি-পাল্টা যুক্তি ও তৃতীয় পক্ষের বক্তব্যের পর রোববার কপিরাইট অফিস শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে রায় দেন। এ রায়ে বলা হয়, সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেন কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘন করেছেন।
কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী জানান, তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের প্রায় ৪৫০টি বইয়ের মধ্যে ২৬০টি বইয়ের লেখক শেখ আবদুল হাকিম। সেই সঙ্গে ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখকও তিনি। এগুলোর মধ্যে ৬টি বইয়ের কপিরাইট তার নামে করা ছিল। বাকি বইগুলোর স্বত্বের জন্য কপিরাইট অফিসে আবেদন করতে পারবেন তিনি।
পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা পর্যন্ত এসব বইয়ের প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য কাজী আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছে কপিরাইট অফিস।
একই সঙ্গে আবদুল হাকিমের নামে কপিরাইট নিবন্ধনকৃত প্রকাশিত বইগুলোর বিক্রিত কপির সংখ্যা ও বিক্রয় মূল্যের হিসাব বিবরণী আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কপিরাইট অফিসে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ রায়ের বিরুদ্ধে কপিরাইট অফিসে আপিল করতে পারবেন কাজী আনোয়ার হোসেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণ বলা হয়েছে, পারিশ্রমিকের বিনিময়ে শেখ আবদুল হাকিমসহ একাধিক লেখককে দিয়ে মাসুদ রানা সিরিজের বইগুলো লিখিয়ে নিয়েছেন কাজী আনোয়ার হোসেন। বাজারজাত করার স্বার্থে প্রকাশক ওই বইগুলোতে নিজের নাম ব্যবহার করতেন। বিষয়টি নিয়ে শেখ আবদুল হাকিমের আপত্তি না থাকলেও রয়্যালিটি নিয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়।
এদিকে মাসুদ রানা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে দাবি করে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে একই ধারায় অভিযোগ করেছেন আরেক লেখক ইফতেখার আমিন। ওই অভিযোগও শিশগিরই নিষ্পত্তির কথা রয়েছে।