‘ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি’
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’র তাণ্ডবের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা ধ্বংসম্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি’। এমন পরিস্থিতিতে রাজনীতি দূরে রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একের পর এক জেলা থেকে বিপর্যয়ের খবর শুনে বুধবার রাতে নবান্নে (পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয়) মুখ্যমন্ত্রীকে দৃশ্যত বিধ্বস্ত দেখায় দেখাচ্ছিল। দেশবাসীর কাছে সহায়তার আর্জি জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে এই ঝড়কে না দেখে মানবিকতার দিক দিয়ে দেখুন। এখন রাজনীতি দূরে থাক। বাংলাকে ধ্বংস থেকে উন্নয়নের পথে ফের দাঁড় করাতে হবে। সবার সহযোগিতা চাচ্ছি’।
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি জানতে মমতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বিরোধী দল কংগ্রেসের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘সব হিসেব উল্টে গেছে। কারও ভবিষ্যদ্বাণী মিললো না। পুরো ঝড় বাংলার উপর দিয়ে গেছে। করোনার জন্য অর্থনীতির অবস্থা শেষ। তার ওপর এই দুর্যোগ। কোনও রোজগার নেই। পুনর্গঠন করতে অনেক টাকা লাগবে’।
বিপর্যয়ের বিবরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এলাকার পর এলাকা ধ্বংস হয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রশাসন পাঁচ লাখ মানুষকে সরাতে পেরেছে। ১৭৩৭ সালে এমন ভয়ঙ্কও ঝড় হয়েছিল। ওয়ার রুমে বসে আছি আমি। নবান্নে আমার অফিস কাঁপছে। একটা কঠিন পরিস্থিতির যুদ্ধকালীন মোকাবিলা করলাম। নন্দীগ্রাম, রামনগর এলাকায় বড় ক্ষতি হয়েছে। দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে ঝড়ের দাপটে। মোট ক্ষতি এখনও হিসেব করা যায়নি। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। পাথরপ্রতিমা, নামখানা, কাকদ্বীপ, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুরসহ সব জায়গায় ধ্বংসের ছবি। রাজারহাট, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, গোসাবা বিপর্যস্ত’।
এতদিন কলকাতায় থাকলেও এমন ঝড় দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমুল দলীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, ‘ঝড় সব শেষ করে দিয়ে গেছে। ১০-১২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। বিস্তারিত খবর পেতে সময় লাগবে’।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বৃহস্পতিবার টাস্ক ফোর্সেও বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করে ত্রাণের কাজে নামবে প্রশাসন।