দেশেই করোনার ওষুধ রেমডিসিভির উৎপাদন করবে বেক্সিমকো!

করোনা ভাইরাস চিকিৎসার জন্য বহুল আলোচিত ওষুধ ‘রেমডিসিভির’ উৎপাদন করবে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এ মাসেই অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটি উৎপাদন করবে বলে খবর বেরিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।

খবরে বলা হয়, এখন পর্যন্ত কভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে রেমডিসিভির। ওষুধটি সেবনে রোগীদের পরিস্থিতির উন্নতিও হয়ে অনেক। তবে ওষুধটি প্রয়োগে পুরোপুরি সফলতা না এলেও করোনার সংকটের সময় রেমডিসিভির ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে শুরু হয়েছে রেমডিসিভির ব্যবহার। মূল উৎপাদনকারী গিলিয়াড তাদের ১৫ লাখ ডোজের প্রথম ব্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের রোগীদের জন্য দান করবে।

বেক্সিমকো’র চিফ অপারেটিং অফিসার রব্বুর রেজা জানিয়েছেন, বেক্সিমকো মে মাসের মাঝামাঝি এই ওষুধ বাজারজাতকরণের অনুমতি পাবে বলে আশা করছে। এরপর থেকে সরকারের মাধ্যমে বিতরণের জন্য এই ওষুধ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করবে প্রতিষ্ঠানটি। ওষুধটি মানুষের শিরায় প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি ডোজ ওষুধের দাম পড়বে ৫-৬ হাজার টাকা। আর গুরুতর অসুস্থ রোগীদের মোট ৫ থেকে ১১ ডোজ ওষুধ প্রয়োগ প্রয়োজন হতে পারে। তবে রোগীর জন্য কতটুকু ওষুধ প্রয়োজন, তা গবেষণা শেষে জানা যাবে।

সরকার রেমডিসিভির বানাতে ভর্তূকি দেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করে রব্বুর রেজা বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার যতটুকু চায় তার ওপর নির্ভর করে আমরা ওষুধ উৎপাদন করবো।’

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, বেক্সিমকো ডোজ প্রতি ওষুধের যে দাম নির্ধারণ করেছে তাতে একজন রোগীর সুস্থ হতে ২৫ থেকে ৬৫ হাজার কিংবা তার চেয়ে বেশি অর্থ লেগে যেতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ওষুধের দাম নিয়ে কোন ঘোষণা দেয়নি।

তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সহ জাতিসংঘ স্বীকৃত স্বল্পোন্নত দেশগুলো এসব প্যাটেন্ট বা সত্ত্ব অগ্রাহ্য করতে পারবে। ফলে এসব দেশ সহনীয় মূল্যে ওষুধ উৎপাদন করতে পারে।

রেমডিসিভির প্রথমে ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছিল। তবে তখন খুব একটা কাজ করেনি এই ওষুধ। তবে এই ওষুধ নতুন এই করোনাভাইরাস সহ কিছু ভাইরাসের পুনঃউৎপাদনের প্রক্রিয়াকে অকার্যকর করে দেয়। ফলে রোগীর ইমিউন সিস্টেমকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখতে ব্যর্থ হয় ভাইরাস।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউটস অব হেলথ যেই পরীক্ষা চালিয়েছে, তাতে দেখা যায় সাধারণ রোগীদের তুলনায় এই ওষুধ সেবনকারী রোগীদের হাসপাতালে থাকার হার ৩১ শতাংশ কমে যায়। অর্থাৎ রোগীরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন। তবে এই ওষুধ সেবনে মৃত্যুর হার খুব একটা কমেনি।

প্রসঙ্গত, এর আগে বেক্সিমকো কভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিশীল আরেক অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ফাভিপিরাভির ও ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনও উৎপাদন করছে। ভারতে স্থানীয় ওষুধ নির্মাতা সিপলা লিমিটেড জানায়, তারাও রেমডিসিভির, ফাভিপিরাভির ও বোলাক্সাভির নামে ৩টি অ্যান্টিভাইরাল উৎপাদনে কাজ করছে। তবে কবে এই ওষুধ বাজারে আসবে, বা এর দাম কত হবে, তা জানাতে রাজি হয়নি তারা। রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.