বাংলাদেশ কনস্যুলেটের উদ্যোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক শহর দুবাইতে প্রথমবারের মতো হয়েছে ‘বাংলাদেশ বইমেলা ও বঙ্গ সাংস্কৃতিক উৎসব ২২‘। প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এ আয়োজন।
মেলায় আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আরব আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে বাংলাদেশিরা তাদের পরিবারসহ মেলায় এসেছেন। অংশ নিয়েছে আমিরাতে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও। তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনের রোববার ছিল শেষ দিন।
বইমেলায় ছিল দেশ ও প্রবাসের ৭৩টি স্টল। বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছে ৩০টি প্রকাশনা সংস্থা। মেলার প্রথম দিনে বাংলাদেশ থেকে আসা কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসেনসহ সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত ও আমেরিকার কবি-সাহিত্যিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মেলায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে ছিল প্রবাসীদের উপচে পড়া ভিড়। মেলার মধ্যে দিয়ে বিশ্বব্যাপী নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন মেলায় আগত অতিথিরা।
তিন দিনব্যাপী বইমেলা শুরু হয় শুক্রবার (৪ নভেম্বর)। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করেন কবি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী। আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
অনুষ্ঠানে কবি কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘বইকে বলা হয় মনের হাসপাতাল। বাংলা ভাষার মহাসমুদ্রের শত বছরের কল্লোল যদি আমরা শুনতে চাই, তাহলে বইয়ের কাছে যেতে হবে৷ বই আমাদের কঠিন সময়েও বাঁচতে শেখায়, মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেয়৷’
তিনি বলেন, ‘দূর প্রবাসে বাংলা ভাষা চর্চায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে বই৷ বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য জানানোর জন্য প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের হাতে বই তুলে দিতে হবে৷’
প্রধান অতিথি মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের হাতে বই তুলে দিলে তাদের মধ্যে সৃষ্টিশীলতা কাজ করবে। বই পড়ার মাধ্যমে তাদের শব্দভাণ্ডার আরও উন্নত হবে।’
তিনি বলেন, ‘অনলাইনের যুগে ভুল ইতিহাস প্রচার হচ্ছে৷ বই পড়ে সঠিক ইতিহাস জানতেই হবে।’
রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবু জাফর বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলা সংস্কৃতি বিকাশের একটি সুযোগ আছে। সেটি সম্ভব বাংলা বই পড়ার অভ্যাসের মাধ্যমে।’
বইমেলার উদ্যোক্তা দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন বলেন, ‘১৯৭২ সালে মাত্র ৩২টি বই দিয়ে ঢাকায় শুরু হয়েছিল একুশে বইমেলা। প্রথমদিকে পাঠকদের তেমন আগ্রহও দেখা যায়নি। একটা সময় তা আন্তর্জাতিক বইমেলায় পরিণত হয়েছে। আমিরাতে চালু হওয়া আজকের এই বাংলাদেশ বইমেলা ও বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব নিয়ে তেমন প্রত্যাশা আমাদেরও।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত ও ব্রিটেনের প্রখ্যাত কবি-সাহিত্যিকরা উপস্থিত ছিলেন।