দশ দিন পর সচল সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবন
অগ্নিকাণ্ডের ধাক্কা সামলে দশ দিন পর সচল হতে শুরু করেছে সচিবালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত ৭ নম্বর ভবনের অক্ষত দপ্তরগুলো। সেই সঙ্গে কর্মকর্তাদের যাতায়াতও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
৭ নম্বর ভবনে দায়িত্বগত একজন পুলিশ কর্মকর্তা রবিবার (৫ জানুয়ারি) বলেন, পঞ্চম তলা পর্যন্ত কার্যক্রম সচল করা হয়েছে। পঞ্চম তলা থেকে উপরের দিকের অংশ এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে।
দশ তলা ওই ভবনের পঞ্চম তলায় রয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ডাক টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একাংশ, অর্থ মন্ত্রণালয়।
চতুর্থ তলায় রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তৃতীয় তলায় অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
দ্বিতীয় তলায় রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। আর নিচ তলায় গণপূর্ত বিভাগের কেয়ারটেকার অফিস ও সেতু মন্ত্রণালয়।
দ্বিতীয় তলায় কর্মরত স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেজাউর রহমান বলেন, গত বুধবারও আমরা প্রবেশ করতে পেরেছিলাম, কিন্তু কোনো কাজ করা যায়নি। আজ বিদ্যুৎ লাইন সচল হলেও ইন্টারনেট, টেলিফোন, ইন্টারকম লাইন এখনো বন্ধ রয়েছে। তবুও আমরা যতটুকু সম্ভব দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
গত ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস দশ ঘণ্টার চেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুনে ষষ্ঠ থেকে নবম তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে অষ্টম ও নবম তলার অধিকাংশ নথি পুড়ে যায়।
ওই ঘটনায় গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবনটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বিদ্যুত সংযোগের ‘ত্রুটি’ থেকে।
ওই ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে এখনো আগুনে পোড়া ঝাঁজালো গন্ধ রয়েছে। লিফটগুলো বন্ধ।
গণপূর্ত বিভাগের উপর সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া বলেন, ভবন আজ সচল হয়েছে। অতি দ্রুত টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগও সচল হবে।
রবিবার থেকে উপদেষ্টা, সচিব ছাড়াও অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গাড়ি নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে সচিবালয়ে দর্শনার্থী, অস্থায়ী পাসধারী ও অন্য ব্যক্তিদের প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডের তদন্তের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা, উপদেষ্টা এবং সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরই কেবল গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হত।
সচিবালয়ে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দাপ্তরিক কাজ সারতে বেছে নেওয়া হয়েছে বাইরের বিভিন্ন সরকারি ভবন।
ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় বেছে নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩, ১৪ ও ১৫ তলার তিনটি ফাঁকা তলাকে।
রেল ভবনের দশম তলায় বসেছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এহছানুল হকসহ আরও কয়েকজন। সেখানেই অফিস করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় পুড়ে গেলেও সচিবালয়ের ৪ নম্বর ভবনে তথ্য মন্ত্রণালয় থাকায় সেখানে অফিস সারছেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দাপ্তরিক কাজ করছেন ক্রীড়া ভবনে। আর শ্রম মন্ত্রণালয়ের সব কার্যক্রম শুরু হয়েছে শ্রম ভবনে।