![](https://multinews24.com/wp-content/uploads/2025/01/shafiqul-750x430.jpg)
`দল নিষিদ্ধের ইচ্ছা নেই, অগ্রাধিকার হাসিনার বিচারে’
বললেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, হত্যা ও গুমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের আওতায় আনাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশে (পিআইবি) কৃষি সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে এবং প্রায় ২ হাজার যুবক খুনের শিকার হয়েছেন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলছে।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য দুটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। তবে নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ওপর।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনার গুজব নাকচ করে দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, দল নিষিদ্ধ করার কোনো ইচ্ছা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই। রাজনৈতিক দলগুলোকেই এসব বিষয়ে সমাধান করতে হবে। তবে, আওয়ামী লীগ জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশের পরিবর্তে অবিরত মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: প্রেস সচিব এ সময় মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা এবং দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের মাধ্যমে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে সরকারের প্রচেষ্টাগুলোকেও তুলে ধরেন। তিনি এই সাফল্যের পিছনে সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাজার সিন্ডিকেট প্রতিহত করার পদক্ষেপকে তুলে ধরেন।
ভুল উৎপাদন তথ্য দিয়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির জন্যও শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা করেন শফিকুল আলম। ‘সরকারি প্রতিবেদনে খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্তের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তব পরিসংখ্যান মেলেনি। এই মিথ্যা রেকর্ডগুলো খাদ্যের দাম বাড়াতে ভূমিকা রেখেছিল। কারণ, ব্যবসায়ীরা প্রকৃত উৎপাদনের মাত্রা সম্পর্কে জানতেন।’
শফিকুল আলম বলেন, গত বছর অতিরিক্ত চাল উৎপাদনের দাবি করা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এক কোটি ২৫ লাখ টন চাল আমদানি করেছে।
ঐতিহাসিক তুলনা টেনে তিনি বলেন, ‘১৯৭৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মিথ্যা দাবি করার কারণে জাতি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছিল।’
তথ্যের নির্ভুলতা: আলম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনৈতিক তথ্যের যথার্থতা নিশ্চিত করতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। অতীতে, মুদ্রাস্ফীতি এবং জিডিপি পরিসংখ্যানকে হেরফের করায় ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি করেছিল। সঠিক তথ্য প্রকাশের ফলে নাগরিকরা একটি টেকসই অর্থনীতি এবং কৃষির সুবিধা পেতে সক্ষম হবে।
সরকারি খাতের বেতন সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম। ‘মহার্ঘ ভাতা এই সমস্যা সমাধানের জন্য একটি যৌক্তিক পদক্ষেপ। ক্রমবর্ধমান ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেও আয় বৈষম্য হ্রাস করতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শফিকুল আলম বলেন, সরকার দেশের দীর্ঘমেয়াদি চাহিদা পূরণের জন্য একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি এবং টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনা তৈরির দিকে মনোনিবেশ করছে।