তাইওয়ানে পেলোসি, আকাশসীমায় চীনের ২১ যুদ্ধ বিমান
চীনের অব্যাহত হুমকির মধ্যেই এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি মঙ্গলবার তাইওয়ানে পৌঁছান। আর তার এই সফরের প্রতিক্রিয়ায় চীনের ২০টির বেশি যুদ্ধ বিমান তাইওয়ানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে। প্রসঙ্গত, তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে চীন। যদিও তাইওয়ান নিজেকে মনে করে স্বাধীন রাষ্ট্র।
টুইটারে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে দ্বীপ রাষ্ট্র তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মঙ্গলবার ২১টি পিএলএ বিমান তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ এলাকায় ঢুকে পড়ে। খবর এনডিটিভির।
তাইওয়ানের আঞ্চলিক আকাশসীমা এবং আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ এলাকা এক নয়। বরং দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ এলাকা অনেক বিস্তৃত এবং তাতে চীনের আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ এলাকার কিছু অংশও পড়ে যায়। এমনকি চীনের মূল ভূখণ্ডের কিছু অংশও এতে পড়ে।
এদিকে পেলোসির এই সফরকে কেন্দ্র করে চীনের সেনাবাহিনীকে রাখা হয়েছে উচ্চ সতর্কতায়।
চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনের সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে এবং পেলোসির তাইওয়ান সফরের প্রতিক্রিয়ায় সামরিক মহড়া চালানো হবে।
ফলো করুন-
ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন সমকাল ইউটিউব
পৃথকভাবে, পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড বলছে, তারা তাইওয়ানের পূর্বে সাগরে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৮২ বছর বয়সী পেলোসি তাইওয়ানে পৌঁছান। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক এক বিমানে তিনি রাজধানী তাইপের সংশান বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ স্বাগত জানান। তার এই সফরকে কেন্দ্র করে বিশ্বের দুই পরাশক্তির মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনে তৃতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হলেন পেলোসি। গত ২৫ বছরের মধ্যে এটিই দেশটির কোনো উচ্চ-পর্যায়ের নির্বাচিত প্রতিনিধির তাইওয়ান সফর। তার এই সফরকে বড় ধরনের উসকানি বলে অভিহিত করেছে বেইজিং এবং তা এই অঞ্চলকে খাদের কিনারায় নিয়ে যাবে বলে বলেছে।
এর আগে পেলোসি তাইওয়ানে অবতরণ করার পর এ সফরের তীব্র সমালোচনা করে চীন। এক প্রতিক্রিয়ায় চীন বলেছে, তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’।
এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাষ্ট্র চীনকে দমন করার জন্য তাইওয়ানকে ব্যবহারের চেষ্টা করছে।
এতে আরও বলা হয়, এটি ক্রমাগত এক চীন নীতিকে লঙ্ঘন করে, তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ বাড়ায় এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎসাহ দেয়। এসব পদক্ষেপ আগুন নিয়ে খেলার মতো, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। যারা আগুন নিয়ে খেলা করে তারা এতে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।
বিবৃতিতে তাইওয়ানকে ‘চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে’ অভিহিত করা হয়।
চীন বলছে, তাইওয়ান প্রশ্নে মুখে এক কথা বলা কিন্তু কাজে এর বিপরীতটি করা বন্ধ করা উচিত যুক্তরাষ্ট্রের। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, পেলোসির সফর ‘এক চীন নীতি এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ তিনটি ইশতেহারের বিধানের গুরুতর লঙ্ঘন’।
তবে পেলোসির দাবি, তার তাইওয়ান সফর সম্পূর্ণরূপে তাইওয়ান সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।