তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা করলো তালেবান

মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী করে আফগানিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা করেছে তালেবান। পাশাপাশি তার ডেপুটি করা হয়েছে সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল গনি বারাদারকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ এ কথা জানান।

তিনি জানান, সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে। আর মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মো. ইয়াকুবকে করা হয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পর থেকে তাদের সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা চলছিল। তখন তালেবান নেতারা বলেছেন, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের চিন্তা করছেন।

এর আগে তালেবানের তিনজন নেতা মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দের রাষ্ট্রপ্রধান মনোনয়ন নিশ্চিত করেছিলেন। মোল্লা হাসান আখুন্দ বর্তমানে তালেবানের প্রবল সিদ্ধান্ত-গ্রহণকারী পরিষদ রেহবারি শূরা বা নীতিনির্ধারণী পরিষদের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। তালেবানের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত কান্দাহারে জন্ম তার। তাকে তালেবানের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

তালেবানের আরেক নেতা বলেছেন, মোল্লা হাসান আখুন্দ ২০ বছর ধরে রেহবারি শূরার প্রধান হিসেবে কাজ করছেন এবং তালেবান নেতাদের মধ্যে তার অনেক সুখ্যাতি রয়েছে। এদিকে এনডিটিভি জানিয়েছে, অপেক্ষাকৃত স্বল্প পরিচিত হলেও দীর্ঘদিন ধরে দলটির রাজনীতিতে যুক্ত রয়েছেন মোল্লা হাসান আখুন্দ। তালেবানের আগের সরকারেও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকাতেও নাম রয়েছে তার।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে হামলার ও কাবুলে তালেবান সরকারের পতনের পরে পাকিস্তানের বালুচিস্তানে গঠিত তালেবান ‘কোয়েটা সুরা’র নেতৃত্বে ছিলেন আখুন্দ। বারাদারের মতোই তাকেও ২০১০ সালে পাকিস্তান প্রশাসন গ্রেফতার করেছিল। পরবর্তীতে মুক্তি পান তিনি। প্রায় দু’দশক ধরে আখুন্দজাদার ঘনিষ্ঠতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত আখুন্দ তালিবানের শান্তি আলোচনা বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘রেহবারি সুরা’রও প্রধান ছিলেন।

তালেবান বলেছে, একইভাবে হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রবীণ আরেকজন নেতা সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর গভর্নর মনোনয়ন দেওয়ার কর্তৃত্বও পেয়েছেন; যেখান থেকে হাক্কানি নেটওয়ার্কের উত্থান ঘটেছিল। এসব প্রদেশের মধ্যে আছে, পাকতিয়া, পাকতিকা, খোস্ত, গার্দেজ, নানগরহার এবং কুনার।

সূত্র: আলজাজিরা।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.