ড. ইউনূসকে চিঠি, রোহিঙ্গা সহায়তা বাড়ানোর ঘোষণা গুতেরেসের
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক ও জীবিকা সহায়তা বাড়ানোর বিষয়ে জাতিসংঘ অগ্রাধিকার দেবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে জাতিসংঘ চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলেও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাবের পাশাপাশি রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া চিঠির জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিব একথা বলেছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের লেখা চিঠির একটি অনুলিপি বুধবার (২৬ ফেব্রুয়িারি) গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিবকে চিঠি লেখেন প্রধান উপদেষ্টা। গত ৭ ফেব্রুয়ারি মহাসচিবের সঙ্গে নিউ ইয়র্কে দেখা করে সেটি হস্তান্তর করেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক ‘হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ’ খলিলুর রহমান।
চিঠিতে বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের উত্তরণ প্রক্রিয়ার প্রতি জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন গুতেরেস।
চিঠিতে বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাবের পাশাপাশি রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগের সঙ্গে একমত জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব লেখেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘ। আমি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরিসহ মিয়ানমারের সৃষ্ট সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য আঞ্চলিক সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়া ন্যাশনস (আসিয়ান) এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য দেশটিতে আমার বিশেষ দূতের মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।
মহাসচিব জানান, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল কীভাবে রাখাইনের জনগোষ্ঠীকে মানবিক ও জীবিকা সহায়তা বাড়াতে পারে, সে ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য এরইমধ্যে সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাখাইনসহ পুরো মিয়ানমারের সংকটপূর্ণ এলাকায় মানবিক সহায়তা যেন নিরাপদ, দ্রুত, টেকসই ও নির্বিঘ্ন হয়, তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ বদ্ধপরিকর। এজন্য জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী এবং মিয়ানমারে অবস্থিত জাতিসংঘের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত থাকার ওপর গুরুত্ব দেবে।
আগামী ১৩ মার্চ চার দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে তার এই সফরে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কার্যকরী আলোচনা হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ড. ইউনূসের পাঠানো আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন রোহিঙ্গা ও অগ্রাধিকার ইস্যুবিষয়ক বিশেষ দূত ড. খলিলুর রহমান।