ডিসি সম্মেলন কাল: মারণাস্ত্র নিষিদ্ধসহ আসছে ৩৫৪ প্রস্তাব

তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন আগামীকাল রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় শুরু হচ্ছে। এই সম্মেলন উপলক্ষে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রায় ১ হাজার ৫০টি প্রস্তাবের মধ্যে আলোচনার জন্য ৩৫৪টি প্রস্তাব নির্ধারণ করা হয়েছে।

এসব প্রস্তাবের মধ্যে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তব্যরত অবস্থায় বডি ক্যামেরা রাখা, মারণাস্ত্র ও ছররা গুলি ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, ডিসিদের হাতে ‘র‌্যাপিড রেসপন্স টিম’ রাখা ইত্যাদি।

রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তবে কার্য অধিবেশনগুলো  হবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে।

সচিবালয়ে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে এই সম্মেলনের বিভিন্ন তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ। তিনি বলেন, এবারের প্রধান প্রধান আলোচনার বিষয় হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদার, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ইত্যাদি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আছে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) আইনের বিধিমালা করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তব্যরত অবস্থায় বডি ক্যামেরা রাখা, মারণাস্ত্র ও ছররা গুলি ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব আছে। এ সময় তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হতাহতের কথাও তুলে ধরেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছর ডিসি সম্মেলনে নেওয়া স্বল্পমেয়াদি সিদ্ধান্তের মধ্যে ৬৪ শতাংশ, মধ্যমেয়াদি সিদ্ধান্তের ৪০ ও দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তের ৩৪ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

সরকারের পরিবর্তন এবং আগের সরকারের কিছু কিছু অগ্রাধিকার বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে না পড়ার কারণে বাস্তবায়নে গতি কিছুটা কম বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে একটি ভিডিও প্রদর্শনের মাধ্যমে। যেখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান কীভাবে হয়েছিল, কীভাবে আন্দোলনের ফল লাভ হলো, সেই বিবরণ থাকবে।

প্রতিবছর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয় এই ডিসি সম্মেলন। ডিসিরা মাঠপর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকেন। সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়, উন্নয়ন কর্মসূচি ও অন্যান্য বিষয়ে মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে থাকেন ডিসিরা। এ জন্য ডিসি সম্মেলন ও তাঁদের প্রস্তাবকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়।

এবার ভিন্ন রকম পরিস্থিতিতে হতে যাচ্ছে এই সম্মেলন। অন্যবার সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন। পরে কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রী-সচিবদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কে ডিসিদের দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হতো।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তাই এবারের সম্মেলন উদ্বোধন করবেন তিনি। এবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ মোট ৩৪টি (৩০টি কর্ম অধিবেশন) অধিবেশন হবে। অন্যবার রাষ্ট্রপতি ও স্পিকারের সঙ্গে অধিবেশন থাকলেও এবার তা নেই। এবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে একটি অধিবেশন রাখা হয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.