ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতি: বাণিজ্য যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব!

ট্যারিফ ম্যান খ্যাত ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতিতে বাণিজ্য যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব। শঙ্কা আবার ফিরতে পারে মহামন্দা। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস, তিন দেশের ওপর শুল্কারোপে অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি চাকরি হারাতে পারেন লাখের বেশি মার্কিন নাগরিক। এদিকে অর্থনীতি বাঁচাতে চীনের দিকে ঝুঁকতে পারে ইইউ। ফাটল ধরতে পারে ট্রান্স আটলান্টিক সম্পর্কে।

ট্যারিফ ম্যান খ্যাত ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতিতে বাণিজ্য যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে বিশ্ব। শঙ্কা আবার ফিরতে পারে মহামন্দা। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস, তিন দেশের ওপর শুল্কারোপে অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি চাকরি হারাতে পারেন লাখের বেশি মার্কিন নাগরিক। এদিকে অর্থনীতি বাঁচাতে চীনের দিকে ঝুঁকতে পারে ইইউ। ফাটল ধরতে পারে ট্রান্স আটলান্টিক সম্পর্কে।

১৯৩০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হার্বার্ট হুভারের নেতৃত্বে পাস হয় স্মুট-হাউলি শুল্ক আইন। আমেরিকান ব্যবসা, কৃষি ও শিল্পকে বাঁচাতে সেসময় প্রায় ৯০০ পণ্যে আরোপ করা হয় ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা আমদানি শুল্ক আরোপ করে অন্যান্য দেশগুলো। এর প্রভাবে বিশ্ববাণিজ্য সংকুচিত হয় ৬৬ শতাংশ। ঘনীভূত হয় মহামন্দা।

 ট্যারিফ ম্যান হিসেবে পরিচিত নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও হাঁটলেন একই পথে। ছবি: সংগৃহীত

ট্যারিফ ম্যান হিসেবে পরিচিত নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও হাঁটলেন একই পথে। দেশটির তিন সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদারদের বিরুদ্ধে শনিবার থেকে কার্যকর হলো শুল্কারোপ। এতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির আশা মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তবে রপ্তানিকারকরাও শুল্ক আরোপিত দেশগুলোর কাছ থেকে পেতে পারেন বাধা। ইতোমধ্যেই কানাডা পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস, নয়া নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মার্কিন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

ক্যাটো ইন্সটিটিউটের রিসার্চ ফেলো ক্লার্ক প্ল্যাকার্ড বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার এই তিন দেশ। পাশাপাশি প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র তিন দেশের কাছ থেকে ট্রিলিয়ন ডলারের ওপর আমদানি করে থাকে। তাই শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাধার শিকার হবেন।’

কানাডা, মেক্সিকো ও চীন, এই তিন দেশের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। মার্কিনদের রপ্তানির চেয়ে আমদানির পরিমাণ বেশি। এই তিন দেশ থেকে আমদানিতে এগিয়ে মোটরগাড়ি ও গাড়ি তৈরির সরঞ্জাম, অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, মুঠোফোন, কম্পিউটার ও খাদ্যপণ্য।

কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন শুল্কনীতিতে প্রতি গ্যালন গ্যাসে ৫০ সেন্ট, গাড়িতে ৩ হাজার ডলার ও মূল্যস্ফীতি পৌঁছাতে পারে চার শতাংশে।

ক্যাটো ইন্সটিটিউটের রিসার্চ ফেলো ক্লার্ক প্ল্যাকার্ড বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কিংবা মেক্সিকো বা কানাডায় গাড়ি তৈরি হবার আগে কমপক্ষে আট বার সীমান্তের এপার থেকে ওপারে যায়। প্রতিবারই যদি গাড়ির সরঞ্জাম প্রবেশের জন্য আপনি শুল্কারোপ করেন, সেক্ষেত্রে অটোমোবাইল ব্যয়বহুল শিল্পে পরিণত হতে পারে।’

ইইউর বিরুদ্ধেও শুল্কারোপের পরিকল্পনা ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তবে এতে ওয়াশিংটনকে অর্থনৈতিক ক্ষতির চেয়েও বেশি ক্ষতি পোহাতে হতে পারে ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে। চীনা পণ্যে ঝুঁকতে পারে ইউরো’র ২৭ দেশ। ভেঙে যেতে পারে ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্ক।

ক্লার্ক প্ল্যাকার্ড বলেন, ‘আমার শঙ্কা, ট্রাম্পের নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইইউ’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে চিড় ধরবে। ইউরোপকে আরো বেইজিংয়ের দিকে ঝোঁকার ক্ষেত্রে ধাবিত করবে। ফাটল ধরতে পারে ট্রান্স আটলান্টিক সম্পর্কে।’

ব্লুমবার্গ ইকোনমিক্সের প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন শুল্কনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবেশী দুই দেশ কানাডা ও মেক্সিকো। যদিও ওয়াশিংটনের ওপর বেইজিং কম নির্ভর হওয়ায় চীনের ক্ষতি হবে তুলনামূলক কম।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.