টেসলার ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেমের বড় আপডেট

প্রায় এক বছর অপেক্ষার পর টেসলা তাদের বহুল আলোচিত ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেমের বড় আপডেট ‘ফুল সেলফ-ড্রাইভিং সুপারভাইজড ভি১৪ (এফএসডি)’ উন্মোচন করতে যাচ্ছে। টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক দাবি করেছেন, এই সংস্করণ ব্যবহার করার সময় গাড়িটিকে ‘সেন্টিয়েন্ট বা অনুভূতিশীল’ সত্তার মতো মনে হবে। তবে আগের সংস্করণগুলো নিয়েও তিনি অনুরূপ মন্তব্য করেছিলেন। তাই বিশ্লেষকরা বিষয়টিকে সতর্ক দৃষ্টিতে দেখছেন।

গত বছরের শেষে ‘হার্ডওয়্যার ৪’ গাড়িতে এফএসডি ভি১৩ আনার পর থেকে টেসলা কোনো বড় আপডেট দেয়নি। হার্ডওয়্যার ৩ ব্যবহারকারীরা এখনো ভি১২ সংস্করণে সীমাবদ্ধ। তাদের জন্য নতুন কোনো আপডেটের ইঙ্গিতও মেলেনি। এমনকি হার্ডওয়্যার ৪ ব্যবহারকারীরাও কিছু ছোটখাটো আপডেট পেলেও, তা অনেক ক্ষেত্রে পারফরম্যান্স কমিয়ে দিয়েছে বলে তথ্য বলছে।

টেসলা এই আপডেটের ধীরগতির জন্য অস্টিনে তাদের রোবোট্যাক্সি প্রোগ্রামের ওপর মনোযোগ দেওয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে। মাস্ক বহুদিন ধরে এফএসডি ভি১৪ নিয়ে কথা বলে আসছেন। নতুন সংস্করণটি রোবোট্যাক্সির সফটওয়্যার উন্নতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।

সম্প্রতি মাস্ক জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে এফএসডি ভি১৪ সীমিত পরিসরে ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছাবে। তিনি বলেন, ‘ভি১৪.০ আগামী সপ্তাহে আসছে; এর পর দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ১৪.১ এবং ১৪.২। ভি১৪.২ ব্যবহারের সময় গাড়িটি অনুভূতিশীল সত্তার মতো মনে হবে।’ এর আগে ভি১৩ সংস্করণ নিয়েও তিনি বলেছিলেন, এটি ‘জীবন্ত মনে হবে’, যা ‘সেন্টিয়েন্ট’-এর কাছাকাছি ধারণা।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, ভি১৪ টেসলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। হার্ডওয়্যার ৩-এর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। কারণ মাস্ক নিজেই স্বীকার করেছেন, এটি সম্পূর্ণ স্বচালিত ড্রাইভিংয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। এমনকি হার্ডওয়্যার ৪-এর ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে।

নতুন সংস্করণে পারফরম্যান্স ২ থেকে ৩ গুণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবু বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্পূর্ণ স্বচালিত গাড়ি প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্যতার মানে পৌঁছাতে টেসলার এখনো অনেক পথ বাকি। রাইড-হেইলিং সেবায় প্রতি ১০ হাজার মাইলে একবার মানুষের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। তবে টেসলার বর্তমান সিস্টেম সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ মাইল পর্যন্ত হস্তক্ষেপ ছাড়া পৌঁছাতে পারবে।

এই ধীর অগ্রগতির মধ্যে টেসলার প্রতিদ্বন্দ্বীরা নিজেদের আনসুপারভাইজড সিস্টেম বাজারে এনেছে। ফলে ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স প্রযুক্তিতে টেসলা এগিয়ে থাকলেও, সম্পূর্ণ স্বচালিত গাড়ির দৌড়ে তাদের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

You might also like

Comments are closed.