টিকা নিয়েও আক্রান্ত: বিজ্ঞানীরা যা বলছেন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য,ব্রাজিল,ফ্রান্স, ইতালি,জার্মানি,রাশিয়া ও ভারতের মতো দেশগুলোতে করোনা টিকা কার্যক্রমে তোড়জোর চলছে। এখন পর্যন্ত টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ইসরায়েল। দেশটির মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশকেই প্রাথমিকভাবে এক ডোজ করে টিকা দেয়া সম্পন্ন হয়েছে। ফলে করোনার টিকা কতটা কার্যকর সেই তথ্য-উপাত্ত পেতে বিজ্ঞানীরা এখন ইসরায়েলের টিকা গ্রহণকারী জনগণের ওপর নজর রাখছেন। আর সেটি করতে গিয়েই এক ধরনের ঘোরের মধ্যে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়,ইসরায়েলে টিকা নেয়ার পরও হাজার হাজার মানুষ নতুন করে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হচ্ছেন, এমনটিই দেখছেন বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে ইসরায়েলের কোভিড মোকাবিলার কর্মসূচির সমন্বয়কারী অধ্যাপক ন্যাশম্যান অ্যাশ বলেছেন, ‘আগে যেমনটি ভাবা হয়েছিল, ফাইজারের টিকার একটি মাত্র ডোজ হয়তো ততটা কার্যকর নয়।‘আমরা করোনা ভাইরাসে গুরুত্বর অসুস্থ হওয়া লোকদের সংখ্যা এখনও কমে আসতে দেখছি না’- বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অ্যাশ।
এদিকে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ইমিউনোলজিস্টের অধ্যাপক ড্যানি অল্টম্যান দাবি করেছেন, কোনও ব্যক্তি টিকা নেয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই সেটি কার্যকর হবে না। ইমিউনিটি তৈরি হতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে।অল্টম্যান বলেন, ‘টিকা নেয়ার পর মানবদেহ করোনার জেনেটিক উপাদানগুলো শনাক্ত করতে এবং অ্যান্টিবডি ও টি-সেল তৈরি করতে বেশ খানিকটা সময় নেয়। এরপর ধীরে ধীরে এগুলো ভাইরাসের দেহকোষে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বা আক্রান্ত কোষগুলোকে মেরে ফেলতে সক্রিয় হয়ে উঠে।
টিকা নেয়ার পরও আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে বিজ্ঞানীদের একাংশ বলছেন, ইসরায়েলে টিকা নেয়ার পরও যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা হয়তো টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। এ থেকে এটা প্রমাণ হয় না যে, ফাইজারের টিকা কার্যকর নয়। হাজার হাজার মানুষের ওপর ফাইজারের টিকার যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছিল, তখনও একই ধরনের প্রবণতা দেখা গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, ট্রায়ালের সময় টিকা নেয়া ও না-নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণের হারে পার্থক্য তৈরি হতে দুই সপ্তাহের মতো সময় লেগেছিল। এমনকি প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার পর ১০০ দিন পর্যন্ত সেই পার্থক্যটা ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ১ হাজার ৬৯ জন। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায়ও দেশটিতে ৩ হাজার ৬৬৬ জন আক্রন্ত ও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৪৩৭ জনের।