টাকা জমিয়ে গ্রামে স্কুল তৈরি করে কমলালেবু বিক্রেতা পেলেন পদ্মশ্রী!
ভারতের ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে পদ্ম পুরস্কার ঘোষণা করে হয়েছে। ৬৪ বছর বয়সী একজন কমলালেবু বিক্রেতাও এই বিশেষ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন! এ নিয়ে গোটা ভারতজুড়ে চলছে হৈচৈ। যিনি নিজ্রি কখনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পান নি, তিনি-ই সুবিধাবঞ্চিত বাচ্চাদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করে ভুষিত হলেন ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানে!
পেশায় কমলা লেবু বিক্রেতা। দিনের শেষে রোজগার খুব সামান্য। কিন্তু তার রয়েছে অদম্য ইচ্ছাশক্তি। সেই ইচ্ছাশক্তির ওপর ভর করেই প্রত্যেকদিন একটু একটু করে টাকা জমিয়ে গ্রামে স্কুল তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।
তার নাম হারেকালা হাজাব্বা। কর্নাটকের ম্যাঙ্গালুরু শহরের কাছে নিউপাদাপু নামে একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা হাজাব্বা। জানা গিয়েছে, ২০০০ সালের আগে হারেকালা হাজাব্বার গ্রামে কোনও স্কুল ছিল না। নিজের সামান্য রোজগারের টাকা জমিয়ে জমিয়েই স্কুল খোলেন তিনি। এমনকি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এক সময়ে স্কুলের জন্য জমি কিনতে নিজের জমানো টাকার পাশাপাশি ঋণও নিয়েছিলেন স্বল্প আয়ের এই মানুষটি। ঋণ নিয়েই তিনি তৈরি করেছিলেন স্কুল।
কিন্তু কেন স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি? উত্তরে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিদেশি এক দম্পতির কাছে ফল বিক্রি করতে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি তাঁর গ্রামে স্কুল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, ‘ওই দম্পতি আমার কাছে কমলার দাম জিজ্ঞেস করেছিল, কিন্তু তখন আমি তা বুঝতে পারিনি। তখন ওই দম্পতি চলে যায়। সেদিন আমার খুব খারাপ লেগেছিল। আমার গ্রামের শিশুদের যেন কোনওদিন এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, তা আমি ভাবছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম, যোগাযোগ কীভাবে একজনকে জীবনে এগিয়ে যেতে এবং মানুষকে কাছাকাছি আনতে সাহায্য করে।’