টাইম এর প্রথম ‘বর্ষসেরা শিশু’ গীতাঞ্জলী রাও
প্রথমবারের মতো ‘কিড অব দ্য ইয়ার’ বা বর্ষসেরা শিশু নির্বাচন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা টাইম ম্যাগাজিন। এ বছর এই সম্মাননা পেয়েছে গীতাঞ্জলী রাও নামের ১৫ বছর বয়সী বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক। এ খবর দিয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট।
গীতাঞ্জলী রাও যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর বাসিন্দা। ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৫ হাজারের বেশি শিশুর মধ্য থেকে তাকে নির্বাচিত করা হয়েছে বলে জানায় টাইম।
টাইমের পক্ষে প্রখ্যাত অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা জোলিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রাও জানায়, তার লক্ষ্য ছিল কেবল নিজ থেকে বিভিন্ন ডিভাইস তৈরি করে বিশ্বের সমস্যার সমাধান করা। এই সম্মাননা সেই লক্ষ্য কিছুটা পাল্টে দিয়েছে। তার ভাষায়, ‘এখন আমি অন্যান্যদেরও এমনটা করতে উৎসাহিত করতে চাই।’
গত বছর অপর এক প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের ‘থার্টি আন্ডার থার্টি’ বা ৩০ অনুর্ধ্ব প্রভাবশালী ৩০ ব্যক্তির তালিকায়ও স্থান পেয়েছিল রাও। মিশিগানের ফ্লিন্ট শহরের খাবারযোগ্য পানির সংকট সমাধানে, মাত্র ১১ বছর বয়সে পানিতে সীসা শনাক্ত করার একটি যন্ত্র তৈরি করে ‘ইয়ং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জ’ পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন তিনি।
রাও জানান, আমি দেখতে গতানুগতিক বিজ্ঞানীদের মতো।
সাধারণত টিভিতে যেসব বিজ্ঞানীদের দেখানো হয় তারা বয়স্ক ও পুরুষ হয়ে থাকে। সে আরো বলে, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমি জানি যে, নিজের মতো কাউকে না দেখা কোনো সহজ বিষয় নয়। আমি এ বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই- যদি আমি পারি, তাহলে তুমিও পারবে, যে কেউ পারবে।
রাওয়ের অন্যান্য আবিষ্কারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, সাইবারবুলিং প্রতিরোধে ‘কাইন্ডলি’ নামের একটি অ্যাপ। অ্যাপটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সাইবার বুলিংয়ের প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিহ্নিত করতে পারে।
তার মতে, এই অ্যাপের উদ্দেশ্য শাস্তি দেয়া নয়। একজন কিশোরী হিসেবে, আমি জানি কিশোর-কিশোরীরা মাঝে মাঝে রেগে যায়। তাই শাস্তির বদলে এই অ্যাপটি তাদের দ্বিতীয়বার নিজেদের আচার-আচরণ নিয়ে ভাবার সুযোগ দেয়।
উল্লেখ্য, টাইম ম্যাগাজিন গত ৯২ বছর ধরে ‘পার্সন অব দ্য ইয়ার’ বা বছরের সেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচন করে আসছে। ২০১৯ সালে ১৬ বছর বয়সে এই তালিকায় সবচেয়ে কনিষ্ঠতম ব্যক্তি হিসেবে স্থান পান গ্রেটা থানবার্গ। তবে কেবল শিশুদের জন্য আলাদা করে কোনো পুরস্কার ছিল না ম্যাগাজিনটির। রাওকে দিয়ে সেই যাত্রা শুরু হলো।
২০২০ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী শিশুকে খুঁজে বের করতে মার্কিন টিভি চ্যানেল নিকেলোডেওন-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে টাইম। এরপর দেশজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্কুলগুলোতে সন্ধান চালিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বাছাই করেছে। এর মধ্যে রাওসহ ফাইনালিস্ট বা চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে বাছাই করা হয়েছিল পাঁচ জনকে। তাদের প্রত্যেকেই নগদ অর্থ পাবে পুরস্কার হিসেবে।